প্রতিদিন যেভাবে ঘুম ভাঙে, সেভাবেই ভেঙেছে আজও। কিন্তু ঘুম ভেঙে যে দৃশ্য দেখলেন ক্যালিফোর্নিয়ার উপসাগরীয় অঞ্চলের মানুষ, তার জন্য তাঁরা একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না। কেউ কেউ এমনটাও জানিয়েছেন, চোখ খুলে মনে হয়েছিল তিনি বোধহয় পৃথিবী ছাড়িয়ে মঙ্গলে এসে পড়েছেন। আকাশের রং এমন অদ্ভুত লাল – এমনটা কি পৃথিবী হতে পারে?
হ্যাঁ, বৃহস্পতিবার সকালে এমনই অবাক করা দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন সান ফ্রান্সিসকো, অকল্যান্ড, বেকারলি শহরের মানুষ। সকাল ১০টাতেও সূর্যের আলো প্রায় শহরে এসে পৌঁছচ্ছে না বললেই চলে। আর যে আলো আসছে তার রং অদ্ভুত ধরনের লাল-কমলা-হলুদ মেশানো। সেখানে নীলের কোনো চিহ্ন নেই। ঠিক মঙ্গলগ্রহের আকাশের মতো দৃশ্য চারিদিকে। তার মধ্যেই দিনের বেলায় ঘরের আলো জ্বালিয়ে বসে আছেন মানুষ।
সামাজিক মাধ্যমের দৌলতে খুব তাড়াতাড়ি এই দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে সারা পৃথিবীতে। এমনকি এও জানা যায় যে সালেম, ওরেগন শহরে এতটা অন্ধকার না হলেও আকাশে লাল রঙের আভা দেখা গিয়েছে। এই ঘটনার পিছনে ক্যালিফোর্নিয়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা দাবানলকেই দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও ক্রিক ফায়ার এবং নর্থ কমপ্লেক্স ফায়ার এই দুয়েরই দূরত্ব উপকূল অঞ্চল থেকে প্রায় ২০০ মাইল, কিন্তু ক্রমশ গোটা ক্যালিফোর্নিয়ার আকাশকেই ঢেকে ফেলছে ধোঁয়ার চাদর। আর সেই চাদর ভেদ করে নীল-বেগুনির মতো ছোট তরঙ্গদৈর্ঘের আলো মাটিতে এসে পৌঁছতে পারছে না। তাই আকাশের রং হয়ে উঠছে লাল।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ পিটার গ্লেইক অবশ্য এই ঘটনাকে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসাবে দেখতে রাজি নন। তাঁর মতে ক্রমশ বদলে যেতে থাকা পরিবেশে এমন অনেক অদ্ভুত ঘটনাই ঘটে যেতে পারে। আর এই সমস্ত ঘটনাই এক সঙ্কটময় পরিসমাপ্তির নির্দেশ দিয়ে যাবে। তবে অনেকে অবশ্য মনে করছেন যে কিছুদিনের মধ্যেই দাবানল নিয়ন্ত্রণে এলে এই অবস্থা কেটে যাবে। ক্যালিফোর্নিয়ার আকাশ কতদিন এমন লাল রং ধরে রাখে, এখন সেটাই দেখার। তবে অসংখ্য মানুষের এমন অভিজ্ঞতা সত্যিই বিরল।
আরও পড়ুন
দাবানলের গ্রাসে ক্যালিফোর্নিয়ার বিস্তীর্ণ বনভূমি, ছবি প্রকাশ নাসার
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
আবারও দাবানলের গ্রাসে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ আমাজন, গত বছরের তুলনায় তীব্রতা ২৮% বেশি