সমুদ্রতল থেকে উচ্চতা প্রায় ৫ হাজার মিটার। তবে এত এত এক্সপিডিশন, অভিযানের পরেও মানুষের চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল বিশালাকার হ্রদের অস্তিত্ব। সম্প্রতি হিমালয় পর্বতের কোলে লুকিয়ে থাকা হ্রদটির অস্তিত্বের কথা জানান দিল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। স্যাটালাইট চিত্রে ধরা পড়ল উত্তর-পূর্ব হিমালয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকা এই বিশেষ হ্রদটির ছবি।
হ্যাঁ, বিশেষই বটে। শুধু উচ্চতার কারণেই নয়, চারিত্রিক দিক থেকে বাকিদের তুলনায় বেশ আলাদা সদ্য –আবিষ্কৃত এই হ্রদটি। কারণ, তার জলের রং বাদামি-লাল বর্ণের। এই অদ্ভুত বৈশিষ্টের জন্য বিগত ২০ বছরে ইসরোর একাধিক ছবিতেই ধরা পড়লেও, হ্রদ হিসাবে তাকে চিহ্নিত করতে পারেননি গবেষকরা।
লাদাখে জাংসকার উপত্যকার কাছেই অবস্থিত এই লাল-হ্রদ। তবে এর আশেপাশে অস্তিত্ব নেই কোনো সভ্যতার। নিকটবর্তী গ্রামের অবস্থানও প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে। তবে অন্যান্য হিমালয়ান হ্রদের থেকে বেশ ছোটই এই হ্রদটির আয়তন। তা আনুমানিক ০.২ বর্গ কিলোমিটার। উত্তর-পূর্ব হিমালয়ে হিমাবাহের ক্রমাগত ক্ষয়ের মাধ্যমেই তৈরি হয়েছে এই হ্রদের— এমনটাই অনুমান বিজ্ঞানীদের। বর্তমানেও ক্রমশ প্রসারিত হচ্ছে হ্রদটি, জানাচ্ছেন তাঁরা।
গবেষকদের পূর্বাভাস, হেমাটাইট বা গোয়েথাইট জাতীয় খনিজের উপস্থিতির জন্যই লাল বর্ণ ধারণ করেছে হ্রদের জল। অর্থাৎ, এক কথায় হ্রদটি লৌহসমৃদ্ধ। তবে এই মুহূর্তেই হ্রদের ভূ-রাসায়নিক তত্ত্বের ওপর নিশ্চিতভাবে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে চান না তাঁরা। মাইক্রোবিয়াল আবহাওয়া এবং ক্লোরিনের অনুঘটিত বিক্রিয়াও দায়ী থাকতে পারে এই রঙের পিছনে। আর এই কারণ খুঁজতেই, আগামী গ্রীষ্মে এই হ্রদে অভিযান চালাতে চলেছেন গবেষকরা। বছরের অধিকাংশ সময়ই হ্রদটির জল বরফ হয়ে থাকার কারণে, সেটাই হবে গবেষণার উপযুক্ত সময়। সেই রহস্যোন্মোচনের দিকেই এখন তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব…
আরও পড়ুন
সৌরশক্তিই উত্তাপ জোগাবে তাঁবুতে, লাদাখে নয়া আবিষ্কার বাস্তবের ‘র্যাঞ্চো’-র
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
কলকাতা থেকে রিকশায় লাদাখ, দূষণমুক্ত পৃথিবীর লক্ষ্যে বিচিত্র অভিযান সত্যেন দাসের