মানুষের শরীরের উপরেই জড়ানো একটি ধাতব পোশাক। তবে শুধুই পোশাক নয়, এটি আসলে এক রোবট। এই পোশাক মানুষের ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। কথা হচ্ছে আয়রনম্যানের সেই বিশেষ যান্ত্রিক পোশাক নিয়েই। তবে এই আয়রনম্যান মার্ভেল ইউনিভার্সের সুপারহিরো নন। বরং আপনিই হয়ে উঠতে পারেন একজন বাস্তব আয়রনম্যান। এই একুশ শতকে এমনটা অবাস্তব তো নয়ই, বরং উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে এখন মানুষের সাধ্যের মধ্যেই এমন রোবোটিক পোশাক তৈরির প্রকল্প নিয়ে এসেছে ক্যালিফোর্নিয়ার সংস্থা স্যুট-এক্স।
২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটি নানা পরীক্ষানীরিক্ষার পর অবশেষে ব্যবহারযোগ্য এক্সোস্কেলিটন রোবট তৈরি করতে পেরেছে। ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে বাজারে এসেছে সেই পোশাক। কলকারখানার শ্রমিক থেকে শুরু করে পর্বতারোহী বা অভিযাত্রী দলের জন্য তাঁরা তৈরি করেছেন বিশেষ বিশেষ পোশাক। কোনো পোশাক মানুষকে ছুটিয়ে নিয়ে যাবে দ্রুতগামী মোটরগাড়ির বেগে। কোনোটা আবার এক ধাক্কায় মানুষকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে কয়েক ফুট উপরে। আয়রনম্যানের পোশাকের সঙ্গে সত্যিই যেন কোনো পার্থক্য নেই। জার্ভিসের মতো অসাধারণ না হলেও, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশে প্রযুক্তিবিদরা অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছেন।
স্যুট-এক্স সংস্থার কর্ণধার হুমায়ুন কাজেরানির কথায়, এই ধরণের পোশাক তৈরিতে সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ হল মানুষের পেশির উপর অত্যাচার বন্ধ করা। কারণ যন্ত্র এখানে একা কাজ করে না। যন্ত্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করতে হয় মানুষকে। আর এর ফলেই অনেক সময় পেশিতে টান সৃষ্টি হয়। তবে এই সমস্যারও সমাধান খুঁজে পেয়েছেন স্যুট-এক্স সংস্থার প্রযুক্তিবিদরা। তাঁদের তৈরি অত্যাধুনিক পোশাকগুলিতে যন্ত্রের কাজটা অনেকটাই মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়াই ঘটে। শুধু মানুষ পোশাকের ভিতর থেকে সেই কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করবে। ইতিমধ্যে মানুষের মধ্যে যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই পোশাক। কিছুদিনের মধ্যেই সাধারণ মানুষও এই পোশাক পরতে শুরু করবেন তাতে সন্দেহ নেই। ২০২০ সালে সংস্থার বার্ষিক আয় হয়েছে ৩৯২ মিলিয়ন ডলার। আর ২০৩০ সালের মধ্যেই সেই পরিমাণটা ৬.৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যাবে বলে মনে করছেন হুমায়ুন কাজেরানি। চাইলে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন একজন সুপারহিরো। আর স্যুট-এক্স সংস্থা আশ্বাস দিচ্ছে, তার জন্য আপনাকে খুব মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হবে না।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
সূর্য-কে ‘নিয়ন্ত্রণ’ করবে মানুষ! পৃথিবী বাঁচাতে পরামর্শ বিজ্ঞানীদের