করোনা অতিমারীর পর আবারও উঠে আসছে অন্যান্য ভয়ঙ্কর রোগের প্রসঙ্গও। এর মধ্যে আমেরিকায় আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে পারকিনসন ডিজিজ। স্নায়বিক এই রোগটির দ্রুত ছড়িয়ে পড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চিন্তিত আমেরিকার চিকিৎসকরা। অবশেষে রোগের প্রকৃত কারণকে চিহ্নিত করা গিয়েছে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকদের কেউ কেউ। তবে যে রাসায়নিক মৌলটিকে দায়ী করছেন গবেষকরা, মার্কিন জনজীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে সেই টেট্রাক্লোরোইথিলিন।
টেট্রাক্লোরোইথিলিন বা টিসিই ব্যবহার বন্ধ করার কথা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন চিকিৎসকরা। শুধুই পারকিনসন ডিজিজ নয়, পাশাপাশি ক্যানসারের মতো ভয়ঙ্কর রোগের জন্যও দায়ী টিসিই। এর মধ্যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে টিসিই ব্যবহার বে-আইনি ঘোষণা করা হলেও সেখানেও লুকিয়ে লুকিয়ে নানা কারখানায় টিসিই ব্যবহার চলছে বলেই জানাচ্ছে পরিবেশ সংগঠনগুলি। আর আমেরিকার ক্ষেত্রে তো বিষয়টা রীতিমতো খারাপ জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। একটি বেসরকারি সংস্থার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে গত এক দশকে টিসিই ব্যবহারের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে জুতোর পালিস, ড্রাইক্লিনিং-এর মতো শিল্পক্ষেত্রগুলি থেকে খুব সহজেই পরিবেশের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এই যৌগ। আর সেখান থেকে মানুষের শরীরে মিশে যাওয়া অতি সহজ।
এই দশ বছরে আমেরিকায় পারকিনসন রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে ৩৫ শতাংশ। শুধু তাই নয়, সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া স্নায়বিক বিকার হিসাবেও স্বীকৃতি পেয়েছে এই রোগ। আর একবার আক্রান্ত হলে সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। প্রায় সমস্ত ধরণের অনুভূতিবোধ হারিয়ে বেঁচে থাকতে হবে সারাজীবন। ভয়ঙ্কর এই মহামারীর হাত থেকে বাঁচতে টিসিই ব্যবহার কমিয়ে আনতেই হবে। গত মে মাসে মিনেসোটাতে টিসিই ব্যবহার বে-আইনি ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি নিউ-ইয়র্ক স্টেটেও একই আইন নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পারকিনসন রোগকে আটকাতে গেলে সারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়েই আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
Powered by Froala Editor