জলাভূমির শহর বর্ধমান। তারই কিছু দূরে কলিগ্রাম। রবিবার সকালে সেখানেই একটি পুকুরে মাছ ধরতে যান বামদেব ভট্টাচার্য। মাছ উঠল ঠিকই। আর তারই সঙ্গে উঠল আরও একটি আশ্চর্য প্রাণী। দেখতে আর পাঁচটা কাছিমের মতোই। কিন্তু তার গায়ের রং একেবারে হলুদ। এমন আশ্চর্য প্রাণী দেখে সত্যিই অবাক হয়ে যান বামদেববাবু। বাড়ি নিয়ে গিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনায় বসেন, কী করা যায় এই প্রাণীটিকে নিয়ে! তবে এর মধ্যেই বর্ধমান সোসাইটি ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ারের সদস্যরা খবর পেয়ে উদ্ধার করেন প্রাণীটিকে।
সোসাইটির সদস্য অর্ণব দাস জানিয়েছেন, প্রাণীটির শরীরে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। এখনও তার চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হয়ে উঠলে প্রাণীটিকে তুলে দেওয়া হবে বনবিভাগের হাতে। কাছিমটিকে সাধারণ ভারতীয় সফট শেল টার্টল বলেই চিহ্নিত করেছেন উদ্ধারকারী দলটি। তবে এমন হলুদ রঙের কাছিম সত্যিই বিরল।
জুলাই মাসেই ওড়িশার বালাসোরে উদ্ধার হয়েছিল অনুরূপ আরেকটি কাছিম। তখনই অবশ্য বিতর্ক উঠেছিল, এই কাছিম নতুন কোনো প্রজাতির? নাকি কোনো জিনগত অসুখের জন্য এর রং হলুদ? অবশ্য বালাসোর থেকে বহুদূরে বর্ধমানে একই রকম প্রাণী উদ্ধার হওয়ায় নতুন প্রজাতির ধারণা নস্যাৎ হয়ে যায়। ফলে একথা স্পষ্ট বোঝা যায়, কোনো জিনগত অসুখের জন্যই এই দুটি কাছিমের শরীরে রঞ্জক তৈরি হয়নি। মানুষের মধ্যে যেমন অ্যালবিনো সিন্ড্রোম দেখা যায়, এক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে।
অবশ্য ঠিক কী কারণে হঠাৎ কাছিমের শরীরে এমন রোগ দেখা দিতে শুরু করেছে, তার কোনো স্পষ্ট উত্তর নেই বিশেষজ্ঞদের কাছে। জুলাই মাস থেকেই অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছে গবেষণা। এখন বর্ধমানের এই নতুন কাছিমটি সেই গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করাই যায়।
Powered by Froala Editor