তখন পুজোর সময় হালকা শীত শীত ভাব আসত। অন্ধকার থাকতে থাকতে কানে টুপি বেঁধে নতুন জামা পরে ঢাকের সঙ্গে সঙ্গে আমরা বাচ্চারা বেরিয়ে পড়তাম নবপত্রিকা স্নানের পথে। নবপত্রিকা স্নান কথাটা অনেক পরে জেনেছি। তখন জানতাম ঠাকুর আনতে যাওয়া। আরেকটু নিজের করে বললে, মাকে আনতে যাওয়া। পালকিতে থাকত নবপত্রিকা। আমরা যে পুজোটায় ঠাকুর আনতে যেতাম সেটায় পালকির উপর ছাতা ধরতেন আমার বাবা আর কখনো কখনো কাঁসর বা আমাদের ভাষায় ঝাঁঝ বাজানোর ভার আমি পেতাম। কেউ একজন পালকির পাশে নবপত্রিকাকে পাখার বাতাস করতে করতে যেত। বাজনার সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে যেতাম আমাদের দ্বারকেশ্বরের ঘাটে। ঘাট থেকে যতক্ষণে মন্দিরে ফিরে আসতাম ততক্ষণে আমার মা গিরিমাটি দিয়ে দরজায় দুর্গানাম লিখে ফেলেছে। তারপর ঠাকুর বরণ করে আমাদের সকালের জলখাবার দিত। মুড়কি আর গুড়পিঠে।
নব্বইয়ের দশক অনেকদিন চলে গেছে। পুজোর সময়কার শীত শীত ভাবও আর নেই। আমাদের ছোটবেলাও কোথায় হাপিস।
বড় হয়ে ছবি তোলা শুরু করার পর প্রত্যেকবার পূজায় রাজগ্রামে থেকেছি। ঠাকুর আনা দেখতে গেছি। ছবিও তুলেছি। কিন্তু সেই হালকা শীত কোনোদিন ধরতে পারিনি।
এত বছরে যেটুকু পেরেছি তার সামান্য কিছু নমুনা এখানে রইল।