বন্যা ও ভূমিক্ষয় আটকাতে বৃক্ষরোপণ, সামিল ৩৩টি গ্রামের মহিলারা

যেদিকে চোখ যায় শুধুই ধু ধু বালিয়াড়ি। গ্রীষ্মের তাপে আরও উষ্ণ হয়ে উঠেছে মরুভূমি। আর এর মধ্যেই বর্ষা আসতে চলেছে। এই সময়টাকে কাজে লাগাতে তাই নেমে পড়েছেন গ্রামের মহিলারা। প্রত্যেকে নিজের বাড়ির কাছে লাগিয়েছেন একটি করে চারা। একজন দুজন নন, এভাবে একসঙ্গে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নিয়েছেন রাজস্থানের তারানগর ব্লকের মহিলারা। মোট ৩৩টি গ্রামের প্রতিটি থেকে অন্তত ১০০ জন করে মহিলা এগিয়ে এসেছেন এই উদ্যোগে। সম্প্রতি বিশ্ব বন্যা ও ভূমিক্ষয়রোধ দিবস উপলক্ষেই নেওয়া হয়েছিল এই উদ্যোগ।

মাত্র একদিনের কর্মসূচিতেই মোট ৫১০০ চারাগাছ রোপণ করেছেন তারানগর ব্লকের মহিলারা। এর মধ্যে রয়েছে ২১৫টি এমন প্রজাতি, যা কেবল মরুভূমি অঞ্চলেই বেঁচে থাকতে পারে। রয়েছে খেজরি, রোহিডা, বের, শাসামের মতো গাছ। মরুভূমির জলবায়ুর সঙ্গে যাদের সম্পর্ক অনেক গভীর। মানুষ এবং উদ্ভিদের পারস্পরিক এই বোঝাপড়ার জায়গাটাকেই তুলে ধরতে চেয়েছেন উদ্যোক্তা শ্যামসুন্দর জ্ঞানী। মানুষ যে এই প্রকৃতির থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো সত্তা নয়, সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন গ্রামবাসীদের। অবশ্য মরুভূমির নিজস্ব উদ্ভিদগুলি ছাড়াও বেশ কিছু ফলের গাছও লাগানো হয়েছে।

কিছুদিন আগেই সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ থেকে ‘ল্যান্ড ফর লাইফ’ পুরস্কার পেয়েছেন শ্যামসুন্দর জ্ঞানী। রাজস্থানের প্রত্যন্ত মরুপ্রান্তরেও পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে তাঁর কর্মকাণ্ড রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। আর তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির প্রধান ও অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারাও। প্রত্যেকের মিলিত প্রচেষ্টাতেই শুরু হয়েছে মরুভূমিকে সবুজ করে তোলার প্রয়াস। আর এই প্রকল্পের নামও দেওয়া হয়েছে ‘হরিৎ মরুভূমি’ প্রকল্প। তবে শুধুই পরিবেশের আলোচনায় সীমাবদ্ধ থাকতে চান না শ্যামসুন্দর জ্ঞানী। কারণ সমাজের সঙ্গে পরিবেশ জড়িয়ে রয়েছে ওতোপ্রতোভাবে। তাই যে সমাজে সাম্য নেই, সেখানে পরিবেশ সুরক্ষাও সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি। আর এই কারণেই তিনি মনে করেছেন মহিলাদের এগিয়ে আসাই সবার আগে প্রয়োজন। তাঁরাও সাড়া দিয়েছেন এই আহ্বানে। মানুষের মিলিত উদ্যোগই তো এই পৃথিবীর চেহারাটা বদলে দিতে পারে।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
কলকাতার বুকে গেরিলা গার্ডেনিং বাংলার শিক্ষকের