পাহাড়ি গুহায় প্রাচীন আশ্রমের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেলেন রেলকর্মীরা

৬০০ বছর না ৭০০ বছর, নাকি তারও বেশি! সেকথা এখনই বলা সম্ভব নয়। মাটির নিচে চাপা পড়ে ছিল একটি মন্দির। মন্দির না বলে আশ্রমও বলা যায়। পাহাড়ি গুহার মধ্যে রীতিমতো গথিক স্থাপত্যের নিদর্শন। অবশ্য বেশিরভাগটাই এখন ভেঙে পড়েছে। কিছু কুলাঙ্গির মতো কাঠামো শুধু দাঁড়িয়ে আছে। উচ্চতা খুব বেশি নয়। মাত্র ৩০ থেকে ৭০ সেন্টিমিটার। কিন্তু তার মধ্যেই লুকিয়ে আছে রহস্য। রেললাইন সম্প্রসারণের জন্য মাটি কাটতে গিয়েই যে এমন নিদর্শন খুঁজে পাওয়া যাবে, তেমনটা ভাবেননি কেউই।

হঠাৎ এমন একটা আবিষ্কারে উচ্ছ্বসিত রেল কোম্পানির ডিরেক্টর মার্ক কিলিক। এই প্রাচীন গুহার নিদর্শন প্রমাণ করে, এই এলাকার ইতিহাস বেশ পুরনো। আর সেই প্রাচীন ইতিহাসের রক্ষণাবেক্ষণের যথা সম্ভব চেষ্টা করা হবে বলেই জানিয়েছেন তিনি। গবেষণার জন্য পুরাতত্ত্ব গবেষকদের একটি দলও পৌঁছেছে ঘটনাস্থলে।

ইংল্যান্ডের সারে জেলার একটি পাহাড়ের ঢালে এমন পুরনো একটি আশ্রমের কথা জানতেন না কেউই। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, চতুর্দশ শতকে সেন্ট ক্যাথেরিন এই আশ্রম তৈরি করেছিলেন। তবে এ-বিষয়ে নিশ্চিত নন তাঁরা। কারণ পাহাড়টিকে অনেকে 'হিল অফ ড্রাগন' বলে থাকে। অতএব কোনো প্রাচীন মিস্টিক সম্প্রদায়ের মন্দির থেকে থাকতে পারে এখানে।

তবে আশার কথা এই যে, সময়কাল নির্ণয় করতে গবেষকদের খুব সমস্যা হবে না। বেলে পাথরের গুহার ছাদে বেশ পুরু হয়ে জমে আছে ভুসাকালি। আর তার নিচে কতগুলি আধপোড়া কাঠকয়লা। কোনো বিশেষ যজ্ঞের জন্যই এই কাঠ জ্বালানো হয়েছিল, আর তার থেকেই কালি জমেছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। ফলে সাধারণ কার্বন ডেটিং পদ্ধতিতেই সঠিক সময়কাল জানা যাবে। গবেষক দলের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে সেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এবং খুব শীঘ্রই আরও বিশদ তদন্ত শুরু হবে।

গিল্ডফোর্ড শহরের কিছু দূরে এই রেললাইন পাতার কাজ শুরু হয়েছিল ১৮৪০ সালে। তবে তখন কোনো গুহার নমুনা পাওয়া যায়নি। ফলে বেশ রহস্য তৈরি হয়েছে। তবে অনেকেই মনে করছেন, তখন হয়তো কেউ খেয়াল করেননি। আর তার ফলেই আশ্রমের বেশিরভাগ দেওয়াল ভেঙে মাটিতে মিশে যায়। যা অবশিষ্ট আছে তা খুবই সামান্য। তবে সেটুকুই গবেষণার সম্বল। এখন এই আশ্রমের সূত্রে ইংল্যান্ডের ইতিহাসের আরও কোনো অজানা তথ্য জানা সম্ভব হয় কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে আছেন সাধারণ মানুষ।

More From Author See More