এপ্রিলেরও অনেকটা সময় পেরিয়ে এসেছি আমরা। এমন সময়ই শুরু হয় শুভ মুহূর্তের আগমন, বাঙালি মেতে ওঠে নববর্ষের মেজাজে। কিন্তু এই বছর যেন এসবের একটু অন্যথা হল। কারণ, করোনা ও লকডাউন। গোটা পৃথিবীতে তো বটেই, বাংলাতেও কী পরিস্থিতি সেটা নতুন করে আর বলার দরকার নেই। কিন্তু সামান্য একটা রোগ কি আমাদের জীবনের ছন্দ ভেস্তে দিতে পারে? বাইরে না হয় বেরলাম না; জীবনকে উদযাপন তো করতেই পারি সবাই! সেই নতুন ভোরের আশাই উঠে এল বাংলার ১২ জন সঙ্গীতশিল্পীর কণ্ঠে। নববর্ষের শুভ মুহূর্তকেই তাঁরা আবাহন করলেন সুরের মাধ্যমে। আর এই সবকিছুর সঙ্গে এসে হাত ধরলেন বাঙালির প্রাণের মানুষ— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
পয়লা বৈশাখ মানেই কবিতায়, ছন্দে, সুরে নতুন দিনকে স্বাগত জানানো। বাঙালি এই দিনটি ভোলে না কখনই। আমাদের রক্তেই যে মিশে আছে এসব। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপ সেই আবহে বাধা সৃষ্টি করেছে। কিন্তু আমরা তো আশা হারাব না! আর সুখে দুঃখে যে মানুষটির কথা আমাদের সাহস জুগিয়েছে, এই কঠিন সময়ও তিনিই আমাদের সহায়। রবি ঠাকুরই তো বলে গেছেন, ‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে, মোরে আরও আরও আরও দাও প্রাণ’!
সেই প্রাণের আবাহনেরই আয়োজন করলেন নীলাঞ্জন ঘোষ। ইউটিউবে নববর্ষের দিনই প্রকাশ পেল এই গান। রবি ঠাকুরের কথায় গলা মিলিয়েছেন ইমন চক্রবর্তী, দুর্নিবার সাহা, আরশাদ আলি খাঁ, গৌরব সরকার, লগ্নজিতা চক্রবর্তী, সায়নী পালিত, উজ্জয়নী মুখার্জি-সহ ১২ জন প্রথিতযশা সঙ্গীতশিল্পীরা। স্টুডিওতে যেতে না পারলেও, ঘরে বসেই মোবাইলে গান গেয়ে পাঠিয়েছেন প্রত্যেকে। আর সেগুলোকে নিয়ে একটা আস্ত মনোগ্রাহী ভিডিও বানিয়েছেন রজত দে এবং দুর্নিবার। সব মিলিয়ে একটা নতুন ভোরের, নতুন আশার আলোর সন্ধানে সবাই।
এই প্রসঙ্গে গায়িকা ইমন চক্রবর্তী প্রহরকে জানালেন, “এই গানটির মাধ্যমে অবশ্যই লকডাউনের সময় থেকে বেরিয়ে আসার একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেটাই একমাত্র নয়। জীবনে যাই হোক না কেন, আমাদের পজিটিভ থাকতে হবে। এই যে ‘মোরে আরও আরও আরও দাও প্রাণ’, এই প্রাণ তো আসলে জীবনবোধ। বেঁচে থাকার মন্ত্র। রবি ঠাকুর তো এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন বারবার। তো সেখান থেকেই এই গানটির পরিকল্পনা আমার মাথায় আসে।”
সেই প্রাণেরই খোঁজ করছি আমরা সবাই। এই কঠিন পরিস্থিতিতেও যাতে আশা না হারাই, সেই বার্তা নিয়েই ছড়িয়ে পড়ুক এই উদ্যোগ। নতুন বছরে মুক্তির আনন্দই হোক আমাদের পাথেয়, এটাই কামনা সবার।