অনেক টালবাহানার পর রাস্তায় নামল জগন্নাথ দেবের রথ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই পুরীতে তাই সাজো সাজো রব। যদিও প্রতি বছরের মতো ভিড় নেই এবছর। ধর্মীয় আবেগের কথা মাথায় রেখে রথযাত্রার অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্কও জন্ম নিয়েছে ইতিমধ্যেই। ধর্মের কাছে কি মাথা নত করল কোর্ট? গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে চারদিকে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই কারফিউ জারি করেছে ওড়িশা সরকার। কেবলমাত্র বাছাই করা ৫০০ জন পাণ্ডা এবং মন্দির্করকর্মী উপস্থিত রথ টানার জন্য। এঁদের প্রত্যেকের করোনা টেস্টে নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। তবে আরও ভালোভাবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ধর্মীয় কর্মকাণ্ড শুরুর আগেই ভালোভাবে স্যানিটাইজ করা হয়েছে সেবাইতদের শরীর থেকে জগন্নাথ দেবার রথ সবই।
স্যানিটাইজেশন প্রক্রিয়া শেষ হলে শুরু হয় জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রাকে রথে তোলার কাজ। পুরীর রথযাত্রার অন্যতম বৈশিষ্ট্য তিনজনের জন্য পৃথক তিনটি রথের ব্যবস্থা। প্রথমে জগন্নাথ দেব এবং সবশেষে বলভদ্রকে রথে বসানো হলে সকাল ৯টা নাগাদ শুরু হয় রথযাত্রা। পুরীর মন্দিরের পাশাপাশি তাই ততক্ষণে সেজে উঠেছে গুন্ডিচা মাসির মন্দিরও।
প্রথা মেনে বন্ধ হল জগন্নাথ মন্দিরের ৭৫২ উনুন। পাশাপাশি গুণ্ডিচা দেবীর মন্দিরে জ্বলে উঠল ৭৫২ উনুন। সেখানেই একদিন প্রস্তুত হবে মহাভোজ। শুধু সেই প্রসাদের অপেক্ষায় ভক্তদের দীর্ঘ লাইন নেই এবছর। রথের রশ্মিতে টান দিয়ে পুণ্য সঞ্চয়ের জন্যও ভিড় নেই। তবে ভক্তরাও অনেকটা নিশ্চিন্ত। যেভাবেই হোক, রথযাত্রা তো বন্ধ হয়ে যায়নি। মন্দির কর্তৃপক্ষ থেকে সরাসরি রথযাত্রা সম্প্রচারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
বন্ধ হবে না পুরীর রথযাত্রা, শর্তসাপেক্ষে অনুমতি সুপ্রিম কোর্টের
এবছর রথযাত্রা না হলে আগামী ১২ বছর বন্ধ থাকত অনুষ্ঠান। তাই মানুষের আবেগের কথা মাথায় রেখে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিচারের দাবি জানিয়েছিল কেন্দ্র সরকার। সেই আবেদনে সারা মিলেছে সোমবার। আর তারপরেই রাতারাতি সমস্ত প্রস্তুতি সামলেছে মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং ওড়িশা সরকার। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় ভক্তদের আবেগকে মর্যাদা দিয়েছে বলেই মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ভক্তদের রথযাত্রার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।
আরও পড়ুন
মোঘল সম্রাটের পর করোনা; এবারের মতো স্থগিত পুরীর রথযাত্রা, নির্দেশ কোর্টের
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ভক্তদের অনুপস্থিতিতেই হল পুরীর স্নানযাত্রা, বাতিল ইসকনের নগর পরিক্রমণ