শীতের আগমন হতে না হতেই তাপমাত্রা পৌঁছেছে হিমাঙ্কের নিচে। জমাট বেঁধে বরফে পরিণত হয়েছে আস্ত হ্রদ। আর এই কননে ঠান্ডার মধ্যেই ভাঙড়া (Bhangra) নাচ্ছেন এক পাঞ্জাবি ভদ্রলোক। তাও জমাট বাঁধা লেকের ওপরে। ওই ব্যক্তি ভারতীয় হলেও অঞ্চলটি ভারত নয়। এই দৃশ্য কানাডার (Canada)। সম্প্রতি এমনই বিচিত্র ছবি ধরা পড়ল কানাডার নিউট্রিশনিস্ট সিনেড মিডারের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট তথা ভ্লগে।
কানাডার প্রান্তিক শহর ইউকনের বাসিন্দা মিডার। গোটা অঞ্চলে গুটিকয় লোকের বাসস্থান হওয়ায়, স্কুল-কলেজ তো বটেই জরুরি পরিষেবা ছাড়া কিছুই নেই ইউকনে। এমনকি খাদ্যদ্রব্যের জন্যেও ৫৪৪ কিলোমিটার দূরে পাড়ি দিতে হয় সেখানকার বাসিন্দাদের। ব্যক্তিগত গাড়িতে গেলেও অন্ততপক্ষে দু’রাত সময় লাগে এই দূরত্ব পাড়ি দিতে। ফলত, স্বাভাবিকভাবেই ৬-৮ সপ্তাহে কেবলমাত্র একবার মিডার বেরোন খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহের ‘অভিযান’-এ।
বর্তমানে শীতের আগমন আরও চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে দু’দিনের এই সফর। বরফে মোড়া পথঘাট যতটা নৈসর্গিক, ততটাই বিপজ্জনকও বটে। আর এই ঝুঁকিপূর্ণ অভিযানটিকেই স্মরণীয় করে রাখতে ভ্লগ তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন মিডার। তবে শহরে পৌঁছে সম্পূর্ণ ভাংড়া দেখে বদলে গেল শীতের এই আমেজটাই। হাড়কাঁপানো ঠান্ডার এমন কাণ্ডকারখানা দেখে নিজেও বিস্মিত কানাডিয়ান তরুণী। কিন্তু এমন নাচের কারণ কী? প্রশ্নের উত্তর পেতে নিজেই ওই ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ জমান মিডার।
গুরদীপ পান্ধের। বেশ কয়েক বছর ধরেই কানাডার স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে উঠেছেন এই প্রবাসী ভারতীয়। পেশায় তিনি সঙ্গীতশিল্পী। তবে ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি তাঁর। তাই ঐতিহ্য মেনে ভাংড়ারও অনুশীলন করে মাঝেমধ্যেই। সম্প্রতি ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ পাওয়ার পর যেন বাড়তি স্বাধীনতা পেয়েছেন গুরদীপ। অবাধে সারা দেশে ঘুরে বেড়ানোর ছাড়পত্র পাওয়ার পরই তাই আনন্দ-উদযাপনে মেতে উঠেছিলেন তিনি। আর নাচের মাধ্যম হিসাবে ভাংড়াকে বেছে নেওয়া গোটা বিশ্ববাসীর মঙ্গলার্থে।
আরও পড়ুন
দাবানলে ‘উজাড়’ কানাডার শহরের স্মৃতি ফিরল কপ-২৬ সম্মেলনে
৫৪৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করা মুখের কথা নয়। তবে এই অপরূপ দৃশ্যের সাক্ষী থাকতে পেরেই মুগ্ধ কানাডিয়ান তরুণী। দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়াও যেন স্বার্থক তাঁর…
আরও পড়ুন
কানাডায় বাড়ি কিনতে লেগে যায় ৩০ বছর, কিন্তু কেন?
Powered by Froala Editor