মহালয়া শেষ। দেবীপক্ষও শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। কিন্ত এর মধ্যেই কচিদের মুখে হাসি ফোটাতে নেমে পড়েছেন কিছু 'স্বপ্নের ফেরিওয়ালা'। বয়স আঠেরো থেকে তিরিশোর্ধ। কেউ এনজিও বা রাজনৈতিক দলের সদস্যও নন তেমন। স্কুল-কলেজ জুড়ে বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে আনাগোনা তাঁদের।
টালা ব্রিজের নিচে খালসংলগ্ন এলাকার বস্তিতে গত দেড়মাস ধরে যাতায়াত করছেন সুরজিৎ চক্রবর্তীরা। পুজোর দিনগুলোয় বস্তির কচিকাঁচাদের কে আর জামা দেবে? কিন্ত আনন্দের ভাগীদার তো সবাই! অতএব জন্ম হল 'চলো হাত ধরি'র। মহালয়ার প্রাক্কালে ওদের সঙ্গে বেশ কিছুটা সময় কাটালেন সুরজিৎরা। গত ২৭ সেপ্টেম্বর টালা ব্রিজ পৌঁছেছিলেন ছাত্র-যুব-প্রৌঢ়-সাধারণ শুভানুধ্যায়ী নাগরিকরা। গিটার বাঁশি গানের সুরে কচি কচি মুখগুলোর মুখে ফুটেছিল হাসি। দুঃস্থ পরিবারগুলোর হাতে পৌঁছে গেল খাবার আর নতুন জামা…
আবার, টালা ব্রিজ থেকে কলেজ স্কোয়ার এলেই দেখবেন, একরাশ ছোট্ট মুখের সঙ্গে হাসি ভাগ করে নিচ্ছে অপেক্ষাকৃত কিছু 'ধেড়ে'। মূলত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগ 'স্বপ্নের আলপনা।' প্রতিবছর বিভিন্ন কলেজ থেকে ছাত্রছাত্রীরা এসে জড়ো হয় কলেজ স্ট্রিটে। মূলত ফেসবুকের মাধ্যমে একে অপরকে চেনে সবাই। মহালয়ার প্রায় সাতদিন আগেই শুরু হয় চাঁদা তোলা । মহালয়ার দুপুরে পথের ধারে অনাদরে পড়ে থাকা ফুলগুলো সেজে ওঠে নতুন রূপে। তাদের কারো হাতে দেখা যাবে ভেঁপু, কারো হাতে রং তুলি। পরনে নতুন জামা। আড্ডা গপ্প খুনসুটিতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল। এই একটা দিন তো নতুন করে বাঁচার। স্বপ্ন দেখার।
কলকাতার বুকে কিছু 'বোকা' স্বপ্ন দেখছে পৃথিবীটা নতুন করে সাজাবার। লাভ ক্ষতির হিসেব না কষে। সদ্যফোটা কুঁড়ির হাসিমুখগুলোই ওদের পাথেয়।