নাভালনির মুক্তির দাবিতে স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ রাশিয়ায়, গ্রেপ্তার সহস্রাধিক

পেরিয়ে গেছে তিন সপ্তাহ। এখনও ক্রেমলিন-সমালোচক নাভালনির অনশন থামেনি। ক্রমশ শারীরিক অবস্থা অবনতি হয়ে চলেছে তাঁর, দিন দুয়েক আগেই সতর্ক করেছিলেন চিকিৎসকরা। তবে তারপরেও তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসককে অনুমতি দেয়নি রাশিয়ার প্রশাসন। এবার ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল সাধারণ মানুষের। অ্যালেক্সি নাভালনির মুক্তির দাবিতে রাস্তায় নামলেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। প্রতিবাদ মিছিল সাড়া ফেলল শতাধিক শহরে।

বুধবার থেকেই ধীরে ধীরে বাড়ছিল উত্তেজনা। প্ল্যাকার্ড হাতে রাজবন্দিদের মুক্তির দাবি উঠছিল রাশিয়া জুড়ে। মিছিলে অংশ নেন তরুণ-তরুণী শিক্ষার্থীরাও। বৃহস্পতিবার আরও মাত্রা বাড়ে তার। তবে চুপ করে বসে নেই রাশিয়ার প্রশাসনও। চলে লাঠিচার্জ। গ্রেপ্তার করা হয় দেড় হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারীদের। যার মধ্যে অর্ধেকেরই বেশি মানুষ সেন্ট পিটার্সবার্গের বাসিন্দা। গ্রেপ্তার হয়েছেন নাভালনির নিকটস্থ দুই বিরোধী শীর্ষ নেতাও।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বুধবার রাতেই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন। নাভালনির কথা উল্লেখ না করেই তিনি সতর্ক করেন বিক্ষোভকারীদের। জানানো হয়, ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করলে পরিণতি ভয়ানক হতে পারে। এমনকি গত সপ্তাহ থেকেই রাশিয়ার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা নতুন নিয়ম-নীতি তৈরির পরিকল্পনা করছেন। ‘সন্ত্রাসবাদী’ হিসাবে চিহ্নিত করে, নিষিদ্ধ করা হতে পারে নাভালনির দলকে— শোনা যাচ্ছে এমনটাও।

অন্যদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বিদেশে নাভালনির চিকিৎসার জন্য আবেদন জানালে তা খারিজ করে দেয় রাশিয়া। জানিয়ে দেওয়া হয়, বর্তমানে বন্দি-হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছে নাভালনি। অন্যান্য বন্দিদের মতো একইভাবে পরিচর্যা হচ্ছে তাঁর। রাশিয়ার এই স্বৈরাচারী মনোভাবের কড়া সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ। নাভালনির মৃত্যু হলে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। 

আরও পড়ুন
কারাগারে মৃত্যুশয্যায় রাশিয়ার বিরোধী দলনেতা, প্রশাসনকে চিঠি চিকিৎসকদের

তবে শুধু বিরোধী নেতার মুক্তিই নয়, বিক্ষোভ মিছিলে বার বার আওয়াজ ওঠে রাশিয়ার দমননীতির বিরুদ্ধেও। ইউক্রেনের সঙ্গে হতে চলা যুদ্ধপরিস্থিতি নিয়েও সরব হন বিক্ষোভকারীরা। সব মিলিয়ে রাশিয়ার পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। উল্লেখ্য, রুশ জননেতা লেনিনের জন্মদিন ছিল গতকাল। আর সেইদিনেই একত্রে রাস্তায় নেমে সাধারণ মানুষ যেন বুঝিয়ে দিলেন, বিপ্লবের দিন ফুরিয়ে যায়নি এখনও। এখন দেখার, এই প্রতিবাদের সামনে সত্যিই নত হয় কিনা পুতিনের কঠোর দমননীতি…

আরও পড়ুন
বাইডেন-কে নির্বাচনে হারাতে চেয়েছিল রাশিয়া!

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ব্লেড দিয়ে গাল কেটে ‘শাস্তি’, নিস্তার নেই চোখে চোখ পড়লেও