করোনায় মৃত্যুর নিরিখে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে ব্রাজিল। আর সামগ্রিক সংক্রমণের নিরিখে তৃতীয়। অতিমারীর শুরুর দিন থেকেই বারবার সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সে দেশের মানুষ। তবে এবার আর সামাজিক মাধ্যমে বা সংবাদপত্রের মধ্যেই ক্ষোভ সীমাবদ্ধ থাকল না। সশরীরে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে সামিল হলেন ব্রাজিলের মানুষ। শনিবার রাজধানী ব্রাজিলিয়া শহরে কংগ্রেস ভবনের সামনে জড়ো হন কয়েক হাজার মানুষ। সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর একটি ফোমের প্রতিকৃতি। প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের পাশাপাশি তাঁকে পরিকল্পিত গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করে শাস্তিও দাবি করেছেন সাধারণ মানুষ।
এখনও অবধি ব্রাজিলে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৬০ হাজার। আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৬ মিলিয়ন মানুষ। অথচ চিকিৎসকদের একাধিক আবেদনের পরেও লকডাউনে সম্মতি জানাননি প্রেসিডেন্ট। তাঁর বক্তব্য, অতিমারীর থেকে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি। শুধু তাই নয়, সামগ্রিক প্রশাসনিক ব্যবস্থায় বারবার কোভিড বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ব্রাজিল পার্লামেন্ট কর্তৃক গঠিত একটি তদন্তকারী কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা নিলে সংক্রমণ অন্তত ৪০ শতাংশ কমিয়ে আনা যেত। পাশাপাশি উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষদের কোনোরকম নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ সরকার। সব মিলিয়ে ক্ষোভ জমা হয়েছে নানা স্তর থেকে।
এর মধ্যেই ব্রাজিলের ওষুধ নির্মাতা সংস্থা বুটানটান জানিয়েছেন তাঁরা সঠিক সময়ে ভ্যাকসিনেশনের প্রস্তাব দিলে সেই প্রস্তাব খারিজ করেছিল সরকার। শুধু তাই নয়, ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে জাতিপুঞ্জের সাহায্য। আমেরিকার ফাইজার কোম্পানিও জানিয়েছে, তাঁদের ভ্যাকসিন ফিরিয়ে দিয়েছে ব্রাজিল সরকার। এদিকে এখনও অবধি মাত্র ১০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক সম্পূর্ণ টিকাকরণের আওতায় এসেছেন। তবু এতকিছুর পরেও কোনো প্রতিক্রিয়া নেই প্রেসিডেন্ট বলসনারোর। এমনকি তাঁর পদত্যাগের দাবি নিয়েও মুখ খোলেননি তিনি। পরিস্থিতি যেভাবে জটিল হয়ে উঠছে, তাতে প্রেসিডেন্ট কিছুদিনের মধ্যেই সামরিক শাসন জারি করতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যম।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
কোভিডে উপজাতি-মৃত্যুর সংখ্যা গোপন! অভিযোগে বিদ্ধ ব্রাজিল সরকার