গত বছর ডিসেম্বরেই ১৫১টি ট্রেন চালানোর দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্ত ঘিরেই তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। প্রশ্ন উঠেছিল রেলের বেসরকারিকরণ নিয়ে। তবে সিদ্ধান্তে যে অনড় কেন্দ্র সরকার, তারই প্রমাণ মিলল গতকাল। এবার সম্ভাব্য বেসরকারি সংস্থাদের নিয়ে টেন্ডার ডাকলেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল।
প্রাথমিকভাবে পরিকল্পনা রয়েছে ১০৯টি রুটে এই বেসরকারিকরণ হওয়ার। রয়েছে ১২টি ক্লাস্টার। তালিকায় আছে হাওড়া-মুম্বাই, হাওড়া-দিল্লি, দিল্লি-মুম্বাই, হাওড়া-চেন্নাই সহ বেশ কয়েকটি ক্লাস্টার। পরবর্তীকালে কলকাতা এবং মুম্বাইয়ের লোকাল ট্রেনের ক্ষেত্রেও বেসরকারি সংস্থাগুলির কাছে আবেদন করা হবে বলে জানা গেছে। বেসরকারিকরণের আওতায় আসবে বেশ কিছু ছোটো আন্তঃশহর রুটও।
রেলের এই বেসরকারিকরণে লাভবান হবে দেশ, এমনটাই মনে করছে রেলমন্ত্রক। বাড়বে রেলের গড় গতিও। ট্রেনগুলির গড় গতিবেগ হবে ১৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার কাছাকাছি। ঘড়ির কাঁটা মেনেই মিলবে পরিষেবা। বাঁচবে জনসাধারণের সময়। তার সঙ্গে ব্যবহৃত হবে আধুনিক প্রযুক্তির কোচ। প্রতি ট্রেনে থাকবে ১৬টি করে কামরা। ফলে কমবে পরিবহন সংকটও। তবে এই রুটগুলিতে রেলের ভাড়া নির্ধারণ করবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাই। সেক্ষেত্রেই থেকে যাচ্ছে এক ধাক্কায় অনেকটা ভাড়া বৃদ্ধির আশঙ্কা। পাশাপাশি, সরকারি সংস্থার এমন হস্তান্তরে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই। জন্ম নিচ্ছে বিতর্কও।
রেলমন্ত্রী জানান, নতুন ট্রেনগুলির কোচ তৈরি হবে ভারতেই। মেক-ইন-ইন্ডিয়া পরিকল্পনায় জোর দেওয়াই তার লক্ষ্য। রেলের পরিচলন এবং অন্যান্য পরিকাঠামো গঠনের দায়িত্ব থাকবে বেসরকারি সংস্থাগুলিরই। কেবলমাত্র চালক এবং গার্ড প্রদান করবে সরকার। রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ভি. কে. যাদব ইঙ্গিত দেন, আগামী ২০২৩ সালের এপ্রিল মাস থেকেই শুরু হতে পারে এই পরিষেবা। উল্লেখ্য, পণ্যবাহী রেলের বেসরকারিকরণ বহু আগেই হয়েছে ভারতে। কিন্তু যাত্রীবাহী ট্রেনের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত দেশে এই প্রথম। সরকারের এই সিদ্ধান্তে কতটা সুবিধা হবে নাগরিকদের, নাকি বাড়বে সংকট? সেই জল্পনাই এখন তুঙ্গে...
Powered by Froala Editor