করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ভয় এবং লকডাউনের জেরে সারা দেশের মতোই এ-রাজ্যেও পরিবহন ব্যবস্থা একেবারে বন্ধ। ৪ মে লকডাউনের দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শেষের পর, গ্রিন জোনগুলিতে বাস পরিষেবা স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেয় সরকার। কিন্তু সামাজিক দূরত্বের নিয়মবিধি এবং নিয়মিত স্যানিটাইজিংএর বন্দোবস্ত করে পুরনো ভাড়ায় বাস চালানো সম্ভব নয়, একথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন বাস মালিকরা। ফলে সপ্তাহ ঘুরলেও রাজ্যের ৪৩০০০ বেসরকারি বাস এবং ৩০০০ মিনিবাসের চাকা ঘোরেনি। অবশেষে তৃতীয় দফার লকডাউনের মেয়াদও যখন শেষ হওয়ার মুখে, তখন পরিবহন ব্যবস্থাকে খানিকটা স্বাভাবিক করতে উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার।
মঙ্গলবার নবান্নে বাসমালিকদের সঙ্গে আলোচনার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে বাসের ভাড়া ঠিক করবেন মালিকরাই। যাঁরা সেই ভাড়া দিতে পারবেন তাঁরাই বাসে উঠবেন। এরপর পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকে ভাড়ার চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করেন বাস মালিকরা। বুধবার এই তালিকা প্রকাশ্যে আসার পর দেখা যায়, একলাফে ভাড়া বেড়ে গিয়েছে প্রায় তিনগুণ। বেসরকারি বাসের বর্ধিত ন্যূনতম ভাড়া ২৫ টাকা। এবং প্রতি ২ কিলোমিটারে ৫ টাকা হিসাবে ভাড়া বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ সর্বোচ্চ ৫০ টাকাও ভাড়া হতে পারে। অন্যদিকে মিনিবাসের ন্যূনতম ভাড়া দাঁড়িয়েছে ৩০ টাকা। এবং এক্ষেত্রে প্রতি ২ কিলোমিটারে ১০ টাকা হিসাবে ভাড়া বৃদ্ধি পাবে। সেইসঙ্গে বাস চালানোর ক্ষেত্রে সুরক্ষার নিয়মাবলি জানানো হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। কোনো বসেই ২০ জনের বেশি যাত্রী নেওয়া যাবে না। প্রতিটি যাত্রার পর বাস নিয়মিত স্যানিটাইজ করতে হবে। এবং চালক ও যাত্রী প্রত্যেকের জন্যই মাস্ক বাধ্যতামূলক।
প্রায় ২ মাস পরিবহন বন্ধ থাকার পর অবশেষে রাস্তায় নামতে চলেছে বাস। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তির অনুভূতির সঙ্গেই জমেছে খানিকটা চিন্তার মেঘ। হঠাৎ এমন ভাড়া বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়বেন অনেকেই, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত মানুষরা। তবে বিরাট সংখ্যক যাত্রীর কথা মাথায় রেখে ৮০ শতাংশ বাসই রাস্তায় নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। রাজ্যের নানা অংশে কমবেশি চলবে বাস। অবশ্য কন্টেনমেন্ট জোনে এখনই বাস পরিষেবা চালু করা হবে না। সেইকারণে বিভিন্ন রুটেও কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে।