ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একাধিকবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন ভেটিকান সিটির প্রধান পোপ ফ্রান্সিস। সম্প্রতি তাঁর ওপরেই নির্মিত একটি তথ্যচিত্রে সমকামিতা নিয়ে এবার মুখ খুলতে দেখা গেল তাঁকে। পোপের বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো সাড়া পড়ে যায় তাঁর সেই বক্তব্যকে নিয়ে।
পোপ ফ্রান্সিসের জীবনের ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র ‘ফ্রান্সেসকো’ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে রোমের একটি প্রেক্ষাগৃহে। সেই তথ্যচিত্রেই তাঁকে বলতে দেখা যায় “সমকামীরাও ঈশ্বরের সন্তান। তাঁদেরও সামাজিক অধিকার রয়েছে। রয়েছে সংসারযাপনের অধিকার।” তবে ২০১৩ সালে সমকামী বিবাহকেই অযৌক্তিক বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন একজন সন্তানের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় পিতা এবং মাতার। সমকামী বিবাহে সেই অনুপস্থিতিই সন্তানের জন্ম পরিচয়কে পরিপূর্ণতা দেয় না।
তবে বিগত বছরগুলিতে ধীরে ধীরে মত বদল হয়েছে পোপ ফ্রান্সিসের। ২০১৪ সালেও তাঁকে সমকামীদের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছিল। তবে তাঁর বক্তব্যকে অস্বীকার করেছিল ‘হোলি সি’ প্রেস এবং ভ্যাটিকান সিটির পরিচালক কর্তৃপক্ষ। তারপরেও প্রথাগত ক্যাথলিক চিন্তা-ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে বারবার মন্তব্য করেছেন তিনি। ২০১৮ সালে অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছিলেন সমকামী সন্তানদের পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য। বলেছিলেন, ঈশ্বরের ইচ্ছায় যদি কেউ বেছে নেয় সমকামিতার পথ, তবে প্রশ্ন তোলার কিছুই নেই। সেই বক্তব্য ঘিরেই আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন পোপ।
সাম্প্রতিক তথ্যচিত্রে ফ্রান্সিসের সেই উদারমনা আধুনিক মানসিকতাই প্রতিফলিত হয়েছে। নির্মাতা ইভগেনি আফিনেভস্কিও অবাক নন খ্রিস্টধর্মের সর্বোচ্চ সংরক্ষকের কথায়। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়াই যে পৃথিবীর নিয়ম, তাই যেন বুঝিয়ে দিলেন পোপ। ধর্মীয় বেড়াজালের মধ্যে মানুষের স্বাধীনতাকে আটকে রাখা একপ্রকার অনৈতিকই। সেই রক্ষণশীলতাকেই ঝেড়ে ফেলার ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে উঠছে ফ্রান্সিসের গলায়...
Powered by Froala Editor