একবিংশ শতকের আধুনিক ভারতে বসবাস করছি আমরা। অত্যাধুনিক স্মার্ট ফোন, নতুন নতুন গাড়ি, টিভি— যাকে বলে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারছি। বিজ্ঞানের গবেষণাো বাড়ছে। চন্দ্রযান-২’র পর পরবর্তী অভিযানেরও পরিকল্পনা চলছে। ডিজিটাল বিপ্লবও দেখছি চোখের সামনে। সব মিলিয়ে বেশ এলাহি ব্যাপার। কিন্তু আমাদের সমাজের দিকে তাকালে এসবের বাইরে ঠিক কী দেখব? আমরা কী আদৌ এগোচ্ছি? আগের থেকে অনেকটাই, কিন্তু এখনও কি মনে বাসা বেঁধে নেই পুরনো ঘৃণ্য প্রথা?
যেমন, বাল্য বিবাহ। ভারতের নিজস্ব একটি সংবিধান আছে, তার আইন কানুন, আদালত ব্যবস্থা আছে। বিয়ের নিয়ম আছে, বয়স আছে; সর্বোপরি একটা মানুষের নিজের জীবনকে বাঁচার সম্পূর্ণ অধিকার আছে। সে কীভাবে বাঁচতে চায় সেটা তাঁর অধিকার। দুর্ভাগ্যবশত, আজও ভারতের গ্রামে নাবালিকা মেয়েদের জোর করে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। আজও বাল্য বিবাহের মতো প্রথা বহাল তবিয়তে পালন করা হয়। রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য বলছে, ভারতের প্রতি চারজন মেয়ের মধ্যে একজনের ১৮ বছরের নিচে বিয়ে হয়ে যায়। হ্যাঁ, এটাই সত্য…
তবে ওই যে বলা হল, সময় বদলাচ্ছে। শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে সমস্ত জায়গায়। মেয়েরা প্রতিবাদ করছে একটু একটু করে। ঠিক যেমন করেছেন পূজা যাদব এবং লীলা। মধ্যপ্রদেশের রামগড় গ্রামের এই দুই তরুণী সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে গিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছেন এই প্রথার বিরুদ্ধে। গ্রামের প্রতিটা ঘরে ঘরে গিয়ে তাঁরা বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে আসছেন। বলছেন মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে।
আজ রাষ্ট্রপুঞ্জও স্যালুট জানিয়েছে পূজা আর লীলার এই উদ্যোগকে। এইভাবে আরও মেয়েরা যদি এগিয়ে আসে; রামগড় নয়, প্রতিটা জায়গাতে প্রতিটা কোণায় এই প্রচার যদি চালানো যায় তাহলেই বদল আসবে। শিক্ষার আলো সমস্ত জায়গায় ছড়াতে হবে। তাহলেই সব কিছু ধুয়ে মুছে যাবে। আপাতত পূজা আর লীলা নিজেদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরাও ওদের হাত ধরি। লড়াই আরও দীর্ঘ হোক…
আরও পড়ুন
প্রতিবছর বিশ্বে যৌনাঙ্গ অপসারণের শিকার অসংখ্য মহিলা, ভারতেও প্রচলিত ছিল এই ঘৃণ্য প্রথা
চিত্রঋণ- indiatimes
আরও পড়ুন
ট্রাকের গায়ে ফুটে উঠছে নারীমুক্তির স্বপ্ন, রং-তুলিতেই ‘স্বাধীনতা’র খোঁজ পাকিস্তানে
Powered by Froala Editor