আমেরিকা ও কানাডায় হানা দিল বিষাক্ত ভীমরুল, বিপদের আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

২০২০ সাল যেন মানুষের বিরুদ্ধে সমস্ত অস্ত্র নিয়ে হাজির হয়েছে। যত দিন যাচ্ছে একের পর এক দুঃসংবাদ। অস্ট্রেলিয়ার দাবানল হোক বা দক্ষিণ আমেরিকার বন্যা; সবার উপরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ তো আছেই। এর মধ্যেই এসে পড়ল আরেক বিভীষিকা। এক ধরনের বিষাক্ত ভীমরুল। সম্প্রতি আমেরিকার ওয়াশিংটন স্টেট এবং কানাডা অঞ্চলে হানা দিয়েছে এই ভীমরুল। আর এই ঘটনায় সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন পরিবেশবিদ থেকে সরকার প্রত্যেকেই।

মনে হতে পারে, ভীমরুল তো আমাদের আশেপাশে প্রায়ই দেখা যায়। এর মধ্যে এত আতঙ্কের কী আছে? কিন্তু কানাডা ও আমেরিকায় যে ভীমরুল হানা দিয়েছে তা সাধারণ ভীমরুল নয়। এই প্রজাতির নাম এশিয়ান জায়েন্ট হর্নেট। সাধারণ ভীমরুলের তুলনায় আকারে বেশ বড়। তার সঙ্গে এর হুলের মধ্যে থাকে প্রাণঘাতী বিষ। অনেক সাপের বিষের চেয়েও ভয়ঙ্কর এই বিষ। প্রতি বছর জাপানে অন্তত ৫০ জন মানুষ প্রাণ হারায় এই ভীমরুলের কামড়ে। এমনকি সাধারণ বোলতার মতো একবার হুল ফোটানোর পর অকেজো হয়ে যায় না এই হুল। বরং আবারও অন্য কোনো মানুষের শরীরে তা বসিয়ে দিতে পারে।

তবে এই ভয়ঙ্কর পতঙ্গটি আমেরিকার ভূখণ্ডে কীভাবে এসে পড়ল, এই প্রশ্ন অবাক করছে প্রত্যেককেই। অনেকে মনে করছেন মালবাহী জাহাজের সঙ্গে এসে পড়েছে এই পতঙ্গ। আবার জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাসস্থান পরিবর্তনের বিষয়টিও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে যেভাবেই আসুক, এই প্রাণী যে গ্রীষ্মের শেষের দিকেই যথেষ্ট বংশবিস্তার করে ফেলতে পারে এবং তার ফলে আতঙ্কের যথেষ্ট কারণ আছে, একথা জোর দিয়ে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই কারণেই ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটর তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছে ভীমরুল তাড়ানোর কর্মসূচি।

তবে এখনই কোনোধরণের জীবাণু নাশক রাসায়নিক ব্যবহার করতে চাইছেন না বিশেষজ্ঞরা। কারণ এই ভীমরুল খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে মৌমাছি। আর কীটনাশক ব্যবহার করলে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে মৌমাছির উপরেও। আমেরিকা ও কানাডায় ইতিমধ্যে মৌমাছির সংখ্যা বেশ কমে এসেছে। তার জন্য বিশেষ সংরক্ষণের ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে হঠাৎ এই পতঙ্গের আগমন যে সেই কর্মসূচির সামনে এক বড়ো ধাক্কা, সে-কথা বলাই বাহুল্য।

Latest News See More