বাংলাদেশের উত্তর পূর্ব অংশের বিস্তীর্ণ জলাভূমি হাওর। একসময় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত এখানে। কিন্তু এখন সেই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু মাছের প্রজাতির অস্তিত্বও সংকটের মুখে। আর তা নিয়েই চিন্তিত এখানকার মৎস্য ব্যবসায়ী থেকে বাসিন্দারা।
বাংলাদেশের এই বিস্তীর্ণ জলাভূমি বিভিন্ন মাছের জন্য বিখ্যাত। শুধু মাছই নয়, এখানকার জলজ বাস্তুতন্ত্রও অত্যন্ত সমৃদ্ধ। হিসেব অনুযায়ী, এখানে প্রায় ২৫৩টি মাছের প্রজাতি রয়েছে। আর এত মাছ থাকার জন্য পরিযায়ী পাখিদেরও ভিড় লেগে থাকে এখানে। কিন্তু এখন সেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। মাছের সংখ্যা কমছে ব্যাপকভাবে। অবস্থা এমন হয়েছে যে, ২৫টি প্রজাতির মাছকে ঝুঁকিপূর্ণ, ৩০টি প্রজাতির মাছকে সংকটাপন্ন এবং ৯টি প্রজাতির মাছকে চরম সংকটাপন্ন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
এর কারণ হিসেবে হাওরের আশেপাশের জমিতে অত্যাধিক ইউরিয়া ব্যবহারকেই দায়ী করেছেন এখানকার জেলে এবং স্থানীয়রা। সেখান থেকে এই বিষ জলে এসে মিশছে। এর সঙ্গে অধিক পরিমাণে মাছ পাওয়ার জন্য জল শুকিয়ে ফেলার অভিযোগও তোলা হচ্ছে। সব মিলিয়ে অবস্থা যে ক্রমশ জটিল হচ্ছে, সেই কথাই কার্যত স্বীকার করে নিচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারা। তবে এই সমস্যার সমাধানের জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন তাঁরা।
সচেতনতার অভাব ও আমাদের কর্মকাণ্ড কীভাবে জলজীবনকে ক্ষতি করে, হাওরের ঘটনা তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আজ সেখানকার ৬৪টি মাছের প্রজাতি বিলুপ্তির মুখে দাঁড়িয়ে। এরপরেও যদি আমরা না ভাবি, প্রশাসনও যদি সতর্ক না হয়, তাহলে হাওরের বাস্তুতন্ত্র সম্পূর্ণ ভেঙে যেতে পারে।