স্তন্যপায়ী, কিন্তু ডিম পাড়ে। আবার ঠোঁটটা ঠিক হাঁসের মতো। জীবনবিজ্ঞানের বইতে হংসচঞ্চু নামের এই প্রাণীটির ছবি আমরা সবাই দেখেছি। কিন্তু এই বিপন্ন পরিবেশে কেমন আছে তারা? সেখবর হয়তো আমরা অনেকেই রাখি না। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার প্রাণী সুরক্ষা বিভাগের রিপোর্টে কিন্তু উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ আছে বলেই জানাচ্ছে। বিগত তিন দশকে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমেছে প্লাটিপাস ওরফে হংসচঞ্চুর বাসস্থান। আর এর মধ্যে প্রাণীটির অস্তিত্ব সঙ্কটে বলেই আশঙ্কা করছে রিপোর্ট।
প্লটিপাশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাসস্থান অস্ট্রেলিয়ার উপকূল জুড়ে। কিন্তু সেই উপকূলের পরিবেশই ক্রমশ দূষিত হচ্ছে সবথেকে বেশি। আর এর ফলেই বিপন্ন হংসচঞ্চুর অস্তিত্ব। জঙ্গলে মানুষের প্রবেশের ফলে প্রজনন কমেছে। আর তার মধ্যে বিভিন্ন শিকারি প্রাণীর হানা তো আছেই। সবদিক দিয়েই বিপন্ন এই জীবন্ত জীবাশ্ম।
ইউনিভার্সিটি অফ নিউ সাউথওয়েলসের সমীক্ষা বলছে, ১৯৯০ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ২ লক্ষ বর্গকিলোমিটার বাসস্থান হারিয়েছে হংসচঞ্চু। শতকর হিসাবে যেটা ২২ শতাংশ। এর মধ্যে আছে কুইন্সল্যান্ড, ভিক্টোরিয়ার মতো অঞ্চল। আর মেলবোর্ন শহরের আশেপাশে কোথাও কোথাও ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত বাসস্থান হারিয়েছে তারা। তবে আশ্চর্যের বিষয়, এখনও আন্তর্জাতিক তালিকায় বিপন্ন প্রাণী হিসাবে স্বীকৃতি মেলেনি। অস্ট্রেলিয়ার প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ অবশ্য ইতিমধ্যে হংসচঞ্চুকে জাতীয় বিপন্ন প্রাণীর তালিকাভুক্ত করার কথা জানিয়ে দিয়েছে। সেইসঙ্গে এদের বাঁচাতে আন্তর্জাতিক সচেতনতারও প্রয়োজন। স্তন্যপায়ী আর পাখির মধ্যে বিবর্তনের যোগসূত্র হয়ে আজও বেঁচে আছে তারা। তবে জীবন্ত জীবাশ্মের জীবন হয়তো আর বেশি বাকি নেই।
Powered by Froala Editor