সমুদ্রে ভাসমান প্লাস্টিক দিয়ে জুতো বানাচ্ছে অ্যাডিডাস

১৯৪৯ সালে অ্যাডলফ ও রুডলফ নামের দুই ভাই মিলে শুরু করেছিলেন বিখ্যাত জুতোর কোম্পানি 'অ্যাডিডাস'। প্রথম থেকেই এরা খেলাধুলো বিশেষত দৌড় প্রতিযোগিতায় পড়ার জুতো বানাত। পরবর্তী ক্ষেত্রে দুই ভাইয়ের ব্যবসা অবশ্য আলাদা হয়ে যায়। অ্যাডোলফ থেকে যান অ্যাডিডাস কোম্পানিতে, অপরজন শুরু করেন আরেকটি বিখ্যাত কোম্পানি 'পুমা'।

অ্যাডিডাস কোম্পানিতে প্রতি বছর প্রায় চারশো মিলিয়নেরও বেশি জুতোজোড়া তৈরি হয়। নাইকির পরে বিশ্বের বাজারে এরাই সর্বোচ্চ জুতো প্রস্তুতকারী কোম্পানি।

এত সংখ্যক জুতো বানাতে উপকরণ যে প্রচুর লাগে, তা বলাই বাহুল্য। পরিবেশ থেকে সেইসব উপকরণ জোগাড় করা খুব সহজ নয়। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। তাই উপকরণ খোঁজার নতুন হদিশ বার করলো এই কোম্পানি।

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, আগামী তিরিশ বছরে সমুদ্রে মাছেদের থেকে প্লাস্টিকের সংখ্যা বেশি হবে। সমুদ্র তীরবর্তী অন্তত ৯০ শতাংশ পাখিদের প্রত্যেকের শরীরেই কম-বেশি প্লাস্টিক রয়েছে।

তাই সমুদ্রে পৌঁছাবার আগেই প্লাস্টিককে অন্য উপায়ে ব্যবহার করতে চেয়েছিল অ্যাডিডাস। সেই অনুযায়ী, ২০১৫ সালেই বিশ্ব পরিবেশ সংস্থা পার্লে-র সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে সমুদ্রে ভাসমান প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার করে জুতো তৈরির পরিকল্পনা ছিল তাদের। 

ইতিমধ্যেই তারা বানিয়ে ফেলেছে ১১ মিলিয়ন জোড়া জুতো। অ্যাডিডাস কোম্পানি এইভাবে প্রায় ২৮১০ টন প্লাস্টিক সমুদ্রে যাওয়ার হাত থেকে ফিরিয়ে এনেছে নিজেদের কারখানায়।

শুধু তাই নয়, এ থেকে তারা জুতোর পাশাপাশি জার্সিও বানিয়েছে। পার্লের এই সংগ্রহে বিভিন্ন উপাদানের ৭৫ শতাংশই সমুদ্রের বর্জ্য থেকে তৈরি। তা সত্ত্বেও মানের দিক থেকে এতটুকুও আপোষ করেনি এই কোম্পানি। অনান্য জুতোর মতো এই জুতোগুলির ক্ষেত্রেও বজায় রেখেছে একই মান।

বিশ্বের অন্যতম জুতো প্রস্তুতকারক একটি কোম্পানির এইরকম ভাবনাচিন্তা আমাদের আগামী দিনে আরও সচেতন করে তুলবে। কারণ এর পরেও বহু টন প্লাস্টিক সমুদ্রে মিশে আছে, যা উদ্ধার করা প্রায় অসম্ভব।

তাই প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর পাশাপাশি অন্য কোনও উপায়ে এই প্লাস্টিক ব্যবহার করা যায় কিনা, তা ভেবে দেখা আশু কর্তব্য।