নগর সভ্যতা যত উন্নত হচ্ছে, প্রযুক্তি যত গ্রাস করছে আমাদের, ততই বেড়ে যাচ্ছে পরিবেশের প্রতি অত্যাচার। ক্রমশ বেড়ে চলা দূষণ তো আছেই; সেই সঙ্গে আছে অরণ্য নিধন। একের পর এক সবুজ এলাকা সাফ করে ফেলা হচ্ছে স্রেফ নগরোন্নয়নের জন্য। কাজেই সবার বক্তব্য, বেশি পরিমাণে গাছ লাগাও। পৃথিবীকে যত বেশি সবুজ করা যাবে, ততই ভালো। মানবসভ্যতার পক্ষে মঙ্গল। জঙ্গলের পরিমাণ বাড়াতেই হবে…
কিন্তু এটাই কি একমাত্র পথ? এতেই কি সব সমস্যার সমাধান হবে? এমন প্রশ্নই তুলে দিল ‘নেচার সাসটেনিবিলিটি’ জার্নালের সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা। যেখানে বলা হচ্ছে অতিরিক্ত পরিমাণে গাছ লাগালে নাকি পৃথিবীরই ক্ষতি! উলটপুরাণ না! ঠিক এমন কথাই উঠে এসেছে এই গবেষণায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, অতিরিক্ত গাছ লাগালে, বা জঙ্গলের পরিমাণ বেড়েই চললে নষ্ট হবে ভারসাম্য। প্রথমত, জীববৈচিত্র্য নষ্ট হবে। যদিও বলা হচ্ছিল, জঙ্গল বাড়লে প্রাণ বাঁচবে বন্যপ্রাণীর। সেটা ঠিকই; কিন্তু সেটা সীমা ছাড়িয়ে গেলে উল্টে সেই জীবজগতেরই ক্ষতিসাধন করবে। দ্বিতীয়ত, খুব বেশি পরিমাণে গাছ লাগালে কার্বন নিঃসরণ কমবে, এমনটা আমাদের ধারণা। কিন্তু সেটাও সীমা ছাড়িয়ে গেলে হিতে বিপরীত হবে। বরং কার্বন নিঃসরণ বাড়তেও পারে নতুন করে। চিলির বেশ কিছু জায়গায় এর মধ্যেই এমন জিনিস দেখা গেছে। যার জন্যই সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা।
তাহলে উপায়? বিজ্ঞানীরা বলছেন, গাছ লাগানো উচিত। অবশ্যই সেটা আমাদের প্রাথমিক করণীয়। কিন্তু সেই পুরো কাজটা হোক একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুসারে। সবকিছুরই একটা সিস্টেম থাকে। অতিরিক্ত হয়ে গেলেও সেটা খারাপ। গাছ লাগানো হোক, সবুজের পরিমাণ বাড়ানো হোক। কিন্তু সবটাই হোক নিয়ম মেনে। সবটাই হোক বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে। এবং সেইসঙ্গে অবশ্যই গাছ কাটাও বন্ধ করতে হবে। দরকারে কড়া পদক্ষেপও নিতে হবে সবাইকে।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
দারিদ্র্য বাধা নয় মুক্তচিন্তার, পরিবেশ দিবসে প্রমাণ করল চিত্তরঞ্জনের প্রান্তিক পড়ুয়ারাই