প্রকৃতিতে অক্সিজেনের জোগান ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে। সবুজ বনভূমিও আর পারছে না কার্বনের সঙ্গে লড়াই করতে। এ কোন পৃথিবী রেখে যাচ্ছি আমরা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য? নিশ্বাস নেওয়ার মতো অক্সিজেনের সংস্থান থাকবে তো? প্রশ্ন উঠছে। ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি মহলে। আর তার মধ্যে পরিবেশ বাঁচাতে অভিনব উদ্যোগ নিতে চলেছে হাঙ্গেরি সরকার। এ বিশ্বকে না হোক, অন্তত নিজেদের দেশকে নবজাতকের বাসযোগ্য করে তুলতে চায় হাঙ্গেরি। আর পরিবেশের প্রশ্ন তো এখন ইউরোপ সহ গোটা পৃথিবীর কাছে এক বড় প্রশ্ন। এরকম পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অর্ব্যান ঘোষণা করলেন, হাঙ্গেরির আগামী প্রতিটি নবজাতকের জন্য ১০টি করে গাছ লাগাবে সরকার।
প্রতিটি শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে লাগানো হবে ১০টি গাছ। হিসাব করলে দাঁড়ায়, একবছরে প্রায় এক মিলিয়ন গাছ লাগানোর পরিকল্পনা। আর এই পরিকল্পনা যদি বাস্তবায়িত করা যায় তাহলে আগামী ১০ বছরে হাঙ্গেরির বনভূমির পরিমাণ বাড়বে প্রায় ২৭ শতাংশ। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে এ এক বিরাট পদক্ষেপ, সন্দেহ নেই। আর এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই তাক লাগিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অর্ব্যান। তবে হাঙ্গেরির সমস্যা তো শুধু পরিবেশের নয়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও বড়সড় ভাঙনের মুখে হাঙ্গেরি। শুকিয়ে যাচ্ছে জলপথ। আর এই পরিস্থিতির সামনে দাঁড়িয়ে সবুজ অর্থনীতিকেই বেছে নিতে চাইছে ইউরোপের বহু দেশ।
শুধু বৃক্ষরোপণই নয়। পরিবেশ বাঁচাতে ৯ দফা পরিকল্পনা পেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তার মধ্যে যেমন আছে বিকল্প শক্তি উৎপাদনকে অগ্রাধিকার দেওয়া, তেমনই প্লাস্টিকের ব্যাবহার কমানো, ব্যাটারি-চালিত গাড়ির ব্যবহার বাড়ানোর মতো প্রতিশ্রুতি। আর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে গেলে ব্যাপক উদ্যোগ প্রয়োজন। হাঙ্গেরি সরকার কতটা করতে পারে, সেদিকেই তাকিয়ে সবাই। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন উদ্যোগ যে ভীষণ জরুরি, সেকথা একবাক্যে সবাই স্বীকার করবেন।