মহামারীর ভয়ে গৃহবন্দি সকলেই, বন্ধ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আর এই অবকাশেই আবিষ্কার হয়ে গেল পদার্থবিজ্ঞানের এক যুগান্তকারী সূত্র। স্যার আইজ্যাক নিউটন আবিষ্কার করলেন পৃথিবীর অভিকর্ষ শক্তি। সেবারে সংক্রমণ ঘটেছিল বুবনিক প্লেগের। আর এবারে করোনা ভাইরাস। এবারেও ঘরে বসেই গবেষণা চালাচ্ছেন অনেক বিজ্ঞানী। আর তার ফলে যে যুগান্তকারী কিছু আবিষ্কার হবে, এতে আর আশ্চর্যের কী আছে? তেমনই একটি আবিষ্কার করে বসলেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত পদার্থবিদ। এই আবিষ্কার যুগান্তকারী তো বটেই, সেইসঙ্গে রীতিমতো অভিনব তাঁর গবেষণা প্রক্রিয়া।
পদার্থের তিনটি অবস্থার কথা তো আমরা সকলেই জানি। কঠিন, তরল এবং গ্যাসীয়। অবশ্য অনেকে জানেন, এছাড়াও প্লাজমা বলে একটি দশার কথা জানেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু এছাড়াও যে পঞ্চম কোনো দশা থাকতে পারে পদার্থের, সেটাই দেখলেন বিজ্ঞানী অমৃতা গ্যাজে। যখন পরিপার্শ্বের তাপ এবং চাপ, দুইই অত্যন্ত কম থাকে, তখনই পদার্থ এই বিশেষ অবস্থার মধ্যে থাকে। তাপের অভাবে যেমন অণুগুলির গতিবেগ কমে যায়, তেমনই চাপ কম থাকার কারণে তাদের অবস্থা কঠিন অবস্থার থেকে কিছুটা আলাদা হয়। অবশ্য এই দশার কোনো নামকরণ এখনও করা হয়নি।
সাসেক্স ইউনিভার্সিটির পদার্থবিদ্যার গবেষক অমৃতা এই গবেষণার জন্য বেছে নিয়েছেন বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেট পদ্ধতিকে। দুই বিজ্ঞানী এই তত্ত্বের অবতারণা করার পরেও পরীক্ষাগারে সফলভাবে প্রয়োগ করতে লেগে গিয়েছিল বহু বছর। তবে পরীক্ষাগারে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে এই কাজ করা গেলেও, তা যে বাড়িতে বসে করা সম্ভব, একথা ভাবতে পারেননি অনেকেই। এখানেই অভিনব অমৃতার গবেষণা। সাসেক্স ইউনিভার্সিটির আরেক প্রবীণ অধ্যাপক পিটার ক্রুগার অমৃতার এই প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেট পদ্ধতির জটিল পরীক্ষা ঘরে বসে সম্পন্ন করা গেলে ভবিষ্যতে আরও অনেক জটিল পরীক্ষার কাজ সহজ হয়ে যাবে। আর তাই ক্রুগার মন্তব্য করেছেন, আগামী দিনে পদার্থবিদ্যার ইতিহাস অমৃতার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। সেইসঙ্গে তার আবিষ্কার থেকেও অনেক নতুন ধারণা পেতে পারেন বিজ্ঞানীরা।
Powered by Froala Editor