সমুদ্র যখন উত্তাল হয়ে ফুঁসে ওঠে আছড়ে পড়ে বড় পাথরের চাঁইয়ে, পাথর তো তাকে আপন করে নেয়। সহ্য করে নেয় সব ঝাপ্টা। পাথর তো পাল্টা ঝাঁপিয়ে পড়ে না! পাথর তো স্থিতপ্রজ্ঞের মতো বসেই থাকে।
তবে সে পাথরের মতো বসে থাকে বলে এত আপত্তি কিসের অনুরাগের? পাথর হয়ে সে তো টেনে নেয় সব। নিয়ে আসছে এত বছর। কিন্তু ফুঁসে ওঠা ঢেউ যেন পাথরটাকে উপড়ে ফেলার লক্ষ্য নিয়েছে। দেখতে চায় কার জোর বেশি? গলার জোর গায়ের জোর কিছু দিয়েই যখন বাগে আনা যাচ্ছে না, বিপরীতে মানুষটা পাথর হয়ে শুষে নিচ্ছে সব, তখন তাকে তো পাগল করে দিতেই হবে।
ধৈর্য কতদিন রাখবে? আমি তো তোমায় ভাঙবই— এমন একটা ভাব নিয়ে চড়া গলায় বলা অনুরাগের কুৎসিত শব্দগুলো ধাক্কা মারে যখন, তখন মনে হয় পাথরটাকে গুঁড়িয়ে তবেই শান্তি পাবে অনুরাগ। কিন্তু পাথর অনড় দেখে তার রাগ আরও বেড়ে যায়। দুমদাম করে দরজার ওপর ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। দূরে, বহু দূরে।
নামে অনুরাগ। তবে শেষের অক্ষর দুটোই ওর একমাত্র পরিচয় এখন। সে ভেবে পায় না কী করে এই মানুষটার সঙ্গে এক ঘরে আরও কত জন্ম থেকে যেতে হবে। জন্ম? হ্যাঁ এক একটা দিন এক একটা জন্মের মতো লাগে আজকাল তার। দীর্ঘ বড় দীর্ঘ। ফুরোতেই চায় না দিন। অনুরাগ যেদিন এমন করে, অকাতরে রাগ বর্ষণ তখন তার মনে হয় এখনই যদি কিছু একটা বড় অঘটন ঘটে যেত...। না, মরতে চায় না সে ঠিক। কিন্তু একটা অঘটন চায়। ভূমিকম্প বা ওইরকম কিছু। যাতে সম্পর্কটা ওলট পালট হয়ে যাবে। সব খারাপের পর তারা যেন দুটো নতুন মানুষ। সব নতুন করে আবার শুরু হবে। গল্পে যেমন হয়। ছোটবেলাটা আবার ফিরে পাওয়া যাবে। একটু একটু করে বড় হওয়া। আবার প্রথম আলাপ। আলগা ভালো লাগা। প্রেমে পড়া একটু একটু করে। যখন হাতের আঙুল নিয়ে নাড়ানাড়ি মানে অনেক কিছু!
নাহ, স্বপ্ন মনে হয় এখন ওসব। ঘুমে নয়, জেগে থেকে চোখের সামনে সে চলতে দেখে দৃশ্যগুলো। ঘুম আজকাল আসে না ভালো করে। প্রেমের দৃশ্যগুলো যখন আবছা হয়ে আসে তখন আরও এগিয়ে আসে ছোটোবেলা। যখন দিনগুলো আরও সহজ ছিল। প্রতিটা পদক্ষেপের জন্য জবাবদিহি করতে হত না। বকুনি ছিল। তবে মনে হয়নি সেটা আটকে রাখার জন্য। আটকে থাকা দমবন্ধ করা এই অনুভূতিটা কি বড়োবেলাতেই হয়?
ছোটোবেলায় জয়েন্ট ফ্যামিলিতে বড় হয়েছে সে। এক জ্যাঠতুতো দাদা একদিন খেলাচ্ছলে পুরনো রান্নাঘরে তাকে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা টেনে দিয়েছিল। কত হবে তখন সে? টু বা থ্রি-তে পড়ার সময় হয়তো। স্মৃতিতে আছে তাই স্পষ্ট। তখন ভয় করেছিল। ভীষণ ভয়। তবে এমন আটকে পড়া অনুভূতি তো হয়নি। কাঁদতে কাঁদতে থেমে গিয়ে ওই ঘরের মধ্যেই খেলা শুরু করেছিল সে। পরে সবাই দরজা খুলে অবাক। পুরনো রান্নাঘরের জিনিস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে কালিঝুল মেখে মেয়েটা দিব্য বসে আছে। কান্নার জল কখন শুকিয়ে গেছে চোখে। বকুনি তো তারপর খেয়েছিল সেই দাদা! চড়চাপড়ও জুটেছিল দাদুর কাছে। কিন্তু সব পেরিয়ে যেটা মনে হয় কই দমবন্ধ তো লাগেনি। এখন খোলা ঘর, বড় জানলা, উঁচু ফ্ল্যাটবাড়ির কামরা পর্যন্ত অসহ্য লাগে। মানুষটাকে অসহ্য লাগে। কী করবে সে?
**
মালতী এসেছে। ঘরের সব কাজ গুছিয়ে দিতে দিতে বলল, ‘দিদি তোমরা এবার একটা বাচ্চা নিয়েই নাও। এভাবে দু’জন দু’জনের মুখ দেখলে কতদিন ভালো থাকে কেউ?’
সে বলেছিল, ‘কী বলো মালতী তাই আবার হয় বুঝি? দু’জনকে দু’জনের ভালো না লাগলে বাচ্চা এসে গেলে ঠিক হয় সব? যাহ, তাহলে তো সবাই বাচ্চাদের কাছেই থাকত! সং সেজে বিয়ে করার কী দরকার?’
মালতী ভয়ানক রেগে যায়। বলে, ‘দিদি এইজন্য তোমার এত ঝঞ্ঝাট জানো তো। এত ভেবে ভেবে মাথাটা গেছে। পুরুষমানুষ একটু অমন হম্বিতম্বি করে। তা নিয়ে এত ভাবলে চলে?’
কাজ সেরে চলে যায় সে।
আবার একটা দীর্ঘ দিন। আবার একলা থাকার অভ্যাস। তবে এখন আর অসুবিধা হয় না। মুখে একটা বেদনা-বেদনা ভাব থাকলেও সে আসলে একাকিত্বটা আজকাল বেশ উপভোগ করে। আবার ছোটো হতে ইচ্ছে করে তার। ছোটোবেলায় বড়ো সাজার খেলা সে অনেক খেলেছে। কখনও মায়ের শাড়ি জড়িয়ে গিন্নি সাজা, কখনও বালিশের ঢাকনা বা গামছা মাথা থেকে ঝুলিয়ে বড় চুলের যুবতী সেজে স্টাইল দেখানো দিদিদের মতো! সব যেন পরপর মনে আছে। যে বয়সে খুব খেলার সময় ছিল... সেই সময়টায় ফিরে যায় সে। মন ভরে ছোট হয়ে যায়। চিন্তা নেই। কষ্ট দমচাপা কিছু আর মনে হয় না। মালতীর মেয়েকে দেওয়ার নাম করে অনলাইনে সুন্দর পুতুলের সেট আনিয়েছে সে। কেউ অবশ্য জানে না। একটা সেট মালতী নিয়ে গেলেও আর একটা তার কাছে যত্নে লুকনো আছে। ওদের অবসরে বের করে খেলা শুরু করে সে। অনেক মমতা দিয়ে তাকে সাজায়, চুল আঁচড়ে পরিপাটি করে। গল্প করে কত। পুতুলের প্যাটপ্যাট করে চেয়ে থাকা দেখে হেসে গড়িয়ে পড়ে।
**
রাত আসে অনুরাগকে সঙ্গে নিয়ে। আবার বড় থাকার অভিনয়টা করতে হয়। একদম ভালো লাগে না। কিন্তু উপায় কী? আর তো কিছু ভালো করে করতেই পারে না সে।
অনুরাগ আসার আগেই সময় মেপে সব গুছিয়ে ফেলে সে। ছোটোবেলাটা তার বড্ড আপন। সেটা কিছুতেই ওর কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে না। তাহলেই সব্বোনাশ। তাই পাথর হয়ে বসে থাকে সে। অনুরাগের শব্দগুলো এখন কান অবধি আর পৌঁছয় না। তার মনে হয় সামনে একটা আধপাগল লোক হাত পা নেড়ে চেঁচাচ্ছে আর আগডুম বাগডুম বকে যাচ্ছে। আর সে চুপ করে বসে। খানিক পরে বিধ্বস্ত অনুরাগ ঘর ছেড়ে চলে যায়। মিটমিট করে যুদ্ধ জয়ের হাসি হাসে সে। রাতে নাক ডাকিয়ে অনুরাগ যখন ঘুমায় তখন পা টিপে টিপে ঘরের বাইরে চলে এসে সে ছোটবেলার হাত ধরে। সোফায় বসে বসে কত গল্প কত খেলা কত বন্ধু তখন তার।
কত স্বর স্পষ্ট ভেসে আসে। দাদা বলছে, ‘আরে এই তিথি ধর ধর প্রজাপতি কেমন ফুল থেকে ধরা যায় দেখা এবার। কেবল বানিয়ে বানিয়ে গপ্প বলা!’
সে বলছে, ‘মোটেই না। আমি দেখাব। আয় আমার পিছনে। সেই মধু খাওয়া ফুল গাছটার কাছে নিয়ে চল আমায়।’
আবার পিঙ্কি বলছে, ‘আরে আলপথ ধরে চলতে গিয়ে পড়ে যাস না। ওই দ্যাখ সজলকাকু এখন ক্ষেতে জল দিচ্ছে। পাইপের সামনে দাঁড়াই চল। কী ফোর্স! আহ, সারাক্ষণ পুতুল হাতে দাঁড়িয়ে থাকিস ভেবলির মতো। চল আজ সজনে ফুল তুলব সবাই মিলে। মা কেমন বড়া ভাজবে।’
সে বলছে, ‘ও মা গো। খাওয়া ছাড়া কিছু মাথায় আসে না তোর। আমি সজনে ফুলের গোছা বেঁধে সাজাব পুতুলদের। না হলে সাজিয়ে রাখব বোকে করে। ছোট্ট! কী ভালো লাগবে বল।’
তারপর একটা মায়া মায়া রোদ্দুর। মিষ্টি হাওয়া। আলপথ ধরে ছুটছে সে। পড়ে যাবে ভেবে একটুও ভয় নেই। হাওয়াটা পিছনে ভরসা দিচ্ছে যেন। সোফাতেই ঘুমিয়ে পড়ে সে।
**
মালতী আসে। ওর কাছে চাবি থাকে। ডেকে তোলে তাকে। অনেক দিন পরে এত ভালো ঘুমিয়ে সে অবাক। অনুরাগ কখন অফিস বেরিয়ে গিয়েছে সে জানেই না! মালতী আবার বকুনি দেয়, ‘কী যে করো দিদি। পড়ে পড়ে ঘুমালে। সোয়ামী বেরিয়ে গেল টেরও পাওনি।’
সে হাসে। মালতীর মুখে দিদি ডাকটা শুনে। সে একটা ছোটো মেয়ে। সে কিনা মালতীর দিদি! কী যে বলে।
মালতী বলতে থাকে, ‘হেসো না। এরকম করলে পুরুষমানুষ থাকে না। এত ভালো বর পেয়েছে। কোথায় সেবা করবে ভালোবাসবে। তা না কেবল খুকিপনা’, গজগজ করে কাজে চলে যায় মালতী।
সে সোফায় আর একটু গড়াগড়ি যায়। মনটা আজ বড় ভালো লাগছে হঠাৎ করে। মনে পড়ছে কালকের সেই আলপথ। তারপর বাড়ি ফিরে এসে মায়ের বকুনি। খলবল করে স্নান। আহ্ রঙিন সব দিন।
তার ইচ্ছেই করে না আর কিছু ভাবতে। অনুরাগের রাগ চিৎকার মারধর সব কেমন ফিকে হয়ে যাচ্ছে আজকাল। মনে থাকে না অনেক কিছু। অনুরাগ আরও রেগে যায়। রাগতেই থাকে। কথা বলতে পারে না। শুধু চিৎকার করে। সেই চিৎকার ভালো শুনতে পায় না এখন আর সে। কানে বিপবিপ হয়। কখনও বা ভোঁ শব্দ। কান চাপতেই হয় না। অনুরাগকে আর চিনতেও পারে না সে। জানে শুধু এই লোকটা আছে বাড়িতে, তার সঙ্গে। নামও প্রায় ভুলতে বসেছে সে।
**
তিথি ঠিকমতো কিছুই করে না আজকাল। খুব বিরক্ত লাগে অনুরাগের। কোনও ছিরিছাঁদ তো নেই-ই। উস্কো খুস্কোহাবভাব। কথার জবাব দেয় না। কোন জগতে থাকে কে জানে। এভাবে থাকা যায়! তিথির মায়ের কাছে এসেছে সে আজ অফিসফেরতা।
চা খেতে খেতে সব বলে যায় অনুরাগ। তিথির মা চুপ করে শোনেন। তারপর বলেন, ‘ওর সেই ছোটোবেলার দুর্ঘটনার কথা তো তোমায় বলেছিলাম। মাথায় মারাত্মক চোট পেয়েছিল। অনেক সময় লেগেছিল সুস্থ হতে। খুব তোলা তোলা করে রাখতে হয়েছিল ওই সময়। অনেক কিছু ভুলে যেত। ঠিকমতো কথা সব ফলো করতে পারত না। নিজের মতো চুপ করে বসে থাকত বা ঘুমাতো। আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে যায়। ডাক্তার বলেছিলেন, একটু যত্নে রাখবেন। মনটা যেন ভালো থাকে। স্ট্রেস ওর জন্য ভালো নয়।’ একটু থেমে তিথির মা আবার বলেন, ‘তোমাদের বিয়ের আগে কিন্তু এই কথাগুলো সবই আমি তোমায় বলেছিলাম।’
অনুরাগ এবার বিরক্ত হয়। উনি তো নিজের মেয়ের দোষ দেখবেন না। জানাই ছিল। বাপ-মা মরা ছেলে সে। এসেছিল একটু সহানুভূতির জন্য। কোথায় কী! দূর! বিড়বিড় করতে করতে ব্যাগ নিয়ে উঠে পড়ে অনুরাগ। মনে মনে ভাবে, যত্নটা কী কম করেছে সে? এত ভালো ফ্ল্যাট। এত স্বাচ্ছন্দ্য। কাজের লোক সব করছে। কোথাও কোনও ভাবনা নেই। আর কী করবে? সারাদিন খাটাখাটনি করে ফিরলে বৌ একটু সঙ্গ দেবে না? কোনও দিন কাজের চাপে মেজাজ খারাপ থাকলে চেঁচিয়ে ফেলে সে একটু আধটু। ঠায় ভূতের মতো বসে থাকে তখন। একটু শান্ত করবে না মাথায় হাত বুলিয়ে? কী এত দেমাক? ওই রাগেই তো একদিন গলাটা টিপে ধরেছিল সে। ধৈর্য রাখতে পারেনি। কিন্তু ওই একদিনই। মেরে ফেলতে তো চায়নি সে। মারতে যাবেই বা কেন খামকা? তারপর থেকে যেন আরও ঠান্ডা মেরে গিয়েছে। কী ছাই করে সারাদিন, ভগবান জানে। আপন মনে হাবিজাবি। অর্ধেক রাত ঘুমোয় না। তাকে শরীরও দেয় না। তাতেও কি সে জোর করেছে কখনও? শালা ঘেন্না ধরে গেল বিবাহিত জীবনে। ধুসসস।
**
ফ্ল্যাটে ফেরে ক্লান্ত অনুরাগ। ঢুকে দেখে বাইরের আলো সব বন্ধ। ‘আচ্ছা পাগলের পাল্লায় পড়া গেছে,’ বলে পটাপট আলোগুলো জ্বালে অনুরাগ। বাথরুমে চোখমুখ ধুয়ে বেরোয়। কোথায় আছেন নবাব-নন্দিনী কে জানে। ড্রয়িং-এ একটা ড্রিঙ্ক নিয়ে বসে সে। টিভি চালায়। কিছুই তেমন দেখার নেই। চোখ বোলানো। হঠাৎ বেডরুমের ভেতর থেকে খুটখাট আওয়াজ আসে। কী করছে কে জানে! একটা মানুষ ফিরেছে বাড়ি। হেলদোল পর্যন্ত নেই। হঠাৎ খিলখিল করে হাসির শব্দ, ‘হল না হল না পারলি না। বোকা কোথাকার। এত সহজ ধাঁধার উত্তরও জানিস না।’
অনুরাগ উঠে পড়ে। কার সঙ্গে এত হেসে কথা বলছে? আজকাল তো হাসতে ভুলে গিয়েছে তিথি। দেখতে হচ্ছে তো। বাইরে থেকে কেউ এসেছে বলেও তো মনে হয়নি। গ্লাস নামিয়ে রেখে ঘরের দিকে এগোয় অনুরাগ। দরজাটা আধভেজানো ছিল। ঠেলতেই খুলে গেল।
বেডটার ধার ঘেঁষে বসে আছে তার স্ত্রী। গায়ে একটা টপ। নীচে কিচ্ছুটি নেই। অদ্ভুত দৃষ্টি। চুল খোলা। সঙ্গে একটা বড় পুতুল। এটা কোত্থেকে পেল ও? এবার অবাক হচ্ছে অনুরাগ। সে ঘরে ঢুকেছে বুঝতেও পারেনি মেয়েটা। আপনমনে বকবক করছে, ‘এমন করলে খেলায় তুই বাদ। নীচে একটা মাঠ আছে। আমি চলে যাব তোকে রেখে। একা কিতকিত খেলব। অন্য বন্ধু আসবে। তখন খুব কাঁদিস, রাগ করিস...’
অনুরাগের এবার ভয় করছে। একটু পিছিয়ে যায় সে। আস্তে আস্তে ডাকে, ‘তি থি...’
ঘাড় ঘোরায় মেয়েটি। এত খুশি খুশি তিথির মুখ শেষ কবে দেখেছে অনুরাগ, মনে পড়ে না।
এবার মেয়েটা বলে ওঠে, ‘আমার নাম তিথি, কাকু। তোমাকে তো চিনি না। তুমি কি আমার বাবার বন্ধু?’
মাথায় হাত দিয়ে বিছানায় ধপ করে বসে পড়ে অনুরাগ।
Powered by Froala Editor