সারা পৃথিবীতে থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস। উত্তরোত্তর খারাপের দিকেই চলেছে ভাইরাসের পরিস্থিতি। এখনো পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৯১ লক্ষের বেশি মানুষ। প্রাণ গেছে পৌনে পাঁচ লক্ষের। চলছে দীর্ঘদিনের গবেষণা, কিন্তু বাজারে আসেনি ভাইরাসের কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ কিংবা ভ্যাকসিন। এবার সেই আশার আলোই দেখাল যুক্তরাষ্ট্রের ফার্মাসিউটিকাল কোম্পানি ‘মডার্না’।
ভাইরাসের সংক্রমণের প্রায় পর পরই ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু করেছিল মডার্না। উল্লেখ্য মানুষের ওপর করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল প্রথম শুরু করেছিল তারাই। সম্প্রতি ফার্মাসিউটিকাল সংস্থা মডার্নার সিইও স্টিফেন ব্যানসেল ভ্যাকসিনের সাফল্যের কথা জানালেন। তিনি দাবি করেছেন, এফডিএ-র এই ভ্যাকসিনকে সবুজ সংকেত দেওয়ার ৮০-৯০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখনো চূড়ান্ত পরীক্ষামূলক প্রয়োগ বাকি আছে এটির। আগামী জুলাইতেই শুরু হবে সেই প্রক্রিয়া। আর তার পরেই বাজারে আসবে জীবনদায়ী এই ভ্যাকসিন।
স্টিফেন ব্যানসেল জানান, তৃতীয় অর্থাৎ শেষ পর্যায়ে এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগ করা হবে ৩০ হাজার মানুষের ওপরে। যার প্রথম লক্ষ্য, করোনা আক্রান্তদের ওপর প্রয়োগে তাঁদের উপসর্গ কমছে কিনা সেই তথ্য জোগাড় এবং দ্বিতীয়ত সংক্রমণের সম্ভাবনা কমিয়ে আনা। এর আগেও জিকা, সিএমভি এবং মার্সের ভ্যাকসিন প্রস্তুতিতে সাফল্য পেয়েছিল এই সংস্থা। সেই একই পদ্ধতিতে ভাইরাসের মেসেঞ্জার আরএনএ-র ওপর ভিত্তি করেই তাঁরা প্রস্তুত করেছেন কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন। যা শরীরে তৈরি করবে অ্যান্টিবডি বা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা। কাজেই তাঁদের এই গবেষণা যথেষ্ট প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য।
এই মুহূর্তে সারা পৃথিবীতে ১২০টি ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে। যার মধ্যে ১৩টি মানব শরীরে প্রয়োগের পর্যায়ে রয়েছে। মডার্নার পাশাপাশি অন্যদিকে এই তালিকায় নিজের জায়গা করে নিলেন নাইজেরিয়ার এক ভাইরোলোলজিস্ট। নাইজেরিয়ার অ্যাডিলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডঃ ওলাডিপো কোলাওলে শুক্রবার দাবি করেন, তিনি সফল হয়েছেন করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন প্রস্তুতিতে। তিনি জানান, পরীক্ষামূলক দিক থেকে প্রতিবারই ইতিবাচক ফলাফল মিলেছে। এবার মানবদেহে চূড়ান্ত প্রয়োগের অপেক্ষা। ট্রায়াল এবং মেডিক্যাল সংস্থাগুলির অনুমোদনের পর বাজারে আসতে ১৮ মাসের মতো সময় লাগবে এই ভ্যাকসিনের।
তবে ভাইরাসের সংক্রমণের হার যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে ভ্যাকসিন বাজারে আসার আগেই মহামারী ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করবে, সেই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এখন দেখার এই প্রতিষেধক কত দ্রুত আসতে পারে বাজারে, কত দ্রুত ঠেকাতে পারে ভাইরাসের বংশবিস্তার...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
রাজ্যে সেরে উঠেছেন ৬০ শতাংশ করোনা আক্রান্ত, গড় সুস্থতার হার দেশের থেকেও বেশি