পিতৃস্মৃতিতে তৈরি লাইব্রেরি, সঙ্গে বয়স্কদের জন্য উদ্যানও – ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ সোনারপুরের ব্যক্তির

নচিকেতার 'বৃদ্ধাশ্রম' গানটা মনে আছে? সন্তান দূরে চলে যাওয়ার আক্ষেপ থেকেই এক পিতার মুখে ভেসে উঠেছিল এই গান। বাস্তবের গল্পগুলোও কিন্তু একইরকম। ছেলে বিদেশে অথবা বাবা-মায়ের থেকে আলাদা থাকে। নিঃসঙ্গতায় কাটে বাবা-মায়ের জীবন। মুখটুকু দেখার ইচ্ছে হলেও সামনাসামনি দেখার উপায় নেই। ছেলে মেয়েদের ব্যস্ততায় চাপা পড়ে যায় বাবা-মায়ের সেসব ইচ্ছে। সুদূর পশ্চিমের কোনো দেশ থেকে মোবাইলে ভিডিও কলই ভরসা নিজের সন্তানকে দেখার। এমন ঘটনা আজকাল আকছারই ঘটে৷ গোটা বাড়ি জুড়ে খাঁ খাঁ করে শূন্যতা, বদ্ধ হয়ে আসে ঘরের বাতাস। এই কদিন আগেও যাকে খাইয়ে দিত তার মা, বাবা এনে দিত পেন-পেন্সিল, খেলনা। চাকরির দায়ে সেই ছেলেমেয়েই আজ কতদূরে চলে গেছে।

কিন্তু এ-শহর এখনও মরে যায়নি, আজও ব্যাতিক্রমী দু’একটা ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি জানা গেল তেমনই এক ব্যাতিক্রমী উদ্যোগের কথা। ছেলে নবরাজের জন্মদিনে, দেবাশীষ সরকার তাঁর নিজের পিতৃস্মৃতিতে উদ্বোধন করবেন 'নবজীবন বিশ্রামালয়' লাইব্রেরি। বয়স্ক মানুষদের জন্য সোনারপুরের নতুন পল্লীতে চালু হবে একটি উদ্যান পার্কও। আর এই আশ্চর্যেরই সাক্ষী হতে চলেছে পয়লা জানুয়ারি।

বহু বাব-মায়েরাই বয়স হয়ে গেলে দূরে কোথাও যেতে পারেন না। তাই উদ্যানে এসে দু’দণ্ড জিরিয়ে নিতে পারবেন তাঁরা। দেখা হবে, কথা হবে সমবয়সী মানুষজনের সঙ্গেও। আশা করা যায়, পিতার উদ্দেশ্যে ছেলের এই উদ্যোগ সমাজকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে। এই পরিশ্রম সফল হলে জীবন সায়াহ্নেও শেষ হাসিটুকু ফুটে উঠবে অনেক বাবা-মায়েদের মুখে।

আরও আশ্চর্য, দেবাশীষবাবু এই একটি উদ্যোগের মাধ্যমে বেঁধে ফেললেন তিনটি প্রজন্মকেও। ছেলের জন্মদিন ও বাবার নামে লাইব্রেরি – মধ্যিখানে সাঁকো হয়ে রয়েছেন দেবাশীষ সরকার। তাঁর এই উদ্যোগকে আমাদের শুভকামনা।

More From Author See More