মাত্র ১২ সপ্তাহের ফুটফুটে একটি টিয়াপাখি। সারা গায়ে সবুজ। উড়তে পারছিল না। বারবার হোঁচট খেয়ে পড়ছিল মাটিতে। কে যেন ছেঁটে ফেলেছে তার ডানাগুলো। কংক্রিটের জঙ্গলে পাখিদের ওড়ার মতো আকাশ আর কতটুকুই বা অবশিষ্ট আছে! কিন্তু সেটুকুও তাদের থেকে কেড়ে নিতে চায় মানুষ। পাখির ডানা ছেঁটে ফেলার এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে কথা বলেন অনেকেই। কিন্তু তবু মানুষের এই নির্মম প্রথার কবলে পড়ে প্রাণ হারায় অজস্র পাখি।
টিয়াপাখিটি অবশ্য সুস্থ হয়ে উঠেছে। তাকে সুস্থ করে তুলেছেন অস্ট্রেলিয়ার এক চিকিৎসক। সহকর্মীরা অনেকেই প্রথমে সেকথা বিশ্বাস করতে চাননি। তাঁরা বলেছিলেন, পাখিটিকে আর বাঁচানো যাবে না। কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্র নন ডা. ক্যাথেরিন আপুলি। দীর্ঘ অধ্যবসায়ে একটু একটু করে পাখিটির ডানায় পালক বসিয়ে দিলেন তিনি। এভাবে কৃত্রিম পদ্ধতিতে পালক বসানোর পদ্ধতি হাতে কলমে এই প্রথম।
আরও পড়ুন
দ্রুতহারে কমছে পাখিদের সংখ্যা, সংরক্ষণ প্রয়োজন শতাধিক প্রজাতির
প্রথমে ডানার গোড়া বাদ দিয়ে, তারপর সেখানে টুথপিক গেঁথে জুড়ে দেওয়া হয় পালক। হাসপাতালের ফেদার ব্যাঙ্কে জমা হওয়া এইসব পালকের সাহায্যে এখন দিব্যি উড়ে বেড়াচ্ছে পাখিটি। তবে এই কৃত্রিম ডানার উপর বেশিদিন নির্ভর করে থাকতে হবে না তাকে। খুব শিগগিরি তার নিজের পালক গজাবে। আর তখন এইসব পালক খসে পড়বে।
দুনিয়াজুড়ে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে এই খবর। সারা বিশ্বের মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন ডা. আপুলি। সব মানুষই কি পশুপাখিদের প্রাণ কেড়ে নেয়? প্রাণ ফিরিয়েও দেন অনেকে। তেমনই এক অনন্য উদাহরণ হয়ে রইল এই উদ্যোগ।