চারিদিকে জঙ্গল, নদী, জলাশয়। তার মাঝখান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে কেউ। হয়ত কোনো প্রয়োজন, অথবা নিছকই অ্যাডভেঞ্চার। কিন্তু যে জায়গা দিয়ে চলেছে, তার অতীত সম্পর্কে কিছু কি জানে সে? নিশ্চয়ই নয়! ডাঙায় যেমন আছে ডাইনোসর, তেমনই জলে রয়েছে বিশাল সব প্রাণী। বর্তমান সময় এসে এমন ধারণাই দিলেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় ১০০ মিলিয়ন বছর আগের পৃথিবীর ভয়ঙ্করতম জায়গার সন্ধান করেছেন তাঁরা। আন্দাজ করা যায় কোন জায়গা? অবশ্য এই বর্ণনার সঙ্গে তার আজকের রূপের কোনো মিল নেই। কথা হচ্ছে সাহারা মরুভূমির সম্পর্কে।
শুধু আফ্রিকা নয়, গোটা পৃথিবীর সবথেকে বড়ো মরুভূমি আজও ভয়ংকরই। কিন্তু প্রাচীন সময় এর রূপটা খানিক আলাদা ছিল। আজকের মতো শুখা, বালিময় মৃত উপত্যকা নয়। রীতিমতো জঙ্গল, জলাশয়, নদী ছিল। সেইসঙ্গে ছিল বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী। তাদের অনেকেই খুব শান্তশিষ্ট ছিল না। এমন কথাই বলছেন এই বিজ্ঞানী ও গবেষকরা। ডেট্রয়েট মার্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক ডঃ নিজার ইব্রাহিমও ছিলেন এই দলে। সাহারা মরুভূমির এমন প্রাচীন অবস্থার ছবির কথাই উঠে এসেছে তাঁদের গবেষণায়। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ইতিহাস, ভূতাত্ত্বিক সব দিক থেকেই যাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সবদিক বিবেচনা করেই বিজ্ঞানীরা তখনকার সাহারাকে ‘পৃথিবীর ভয়ংকরতম স্থান’ বলেছেন।
সাহারার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগেও জীবাশ্ম ও প্রয়োজনীয় নিদর্শন পাওয়া গেছে। এবার মরক্কোর দক্ষিণ-পূর্ব অংশ থেকেও পাওয়া গেছে প্রাচীন মেরুদণ্ডী প্রাণীদের জীবাশ্ম। সেখান থেকেই পাওয়া গেছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। উঠে আসছে এর ভয়ংকর রূপ। যেমন, আনুমানিক ১০০ মিলিয়ন বছর আগে সাহারার এই অঞ্চলে দাপিয়ে বেড়াত ডাইনোসররা! শুধু তারাই নয়; টেরোসরাসের মতো বড়ো বড়ো পাখি, বিশাল হিংস্র কুমিররাও ঘিরে থাকত তল্লাট। ডাঙা ছাড়াও জলে ছিল বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, জলজ প্রাণী। অনেকেরই আকার ছিল বিশাল। এমনকি থাকত অঙ্কোপ্রিসটিসের মতো প্রাচীন শার্ক। সব মিলিয়ে সাহারা মরুভূমির প্রাচীন দশাও যে খুব একটা সুবিধের ছিল না, তা বলাই যায়।