ভারতের বুকে ছড়িয়ে আছে অনেক বৈচিত্র্য। ছড়িয়ে আছে নানা গল্প। কিন্তু একটা গল্প সেই স্বাধীনতার সময় থেকে আজ অবধি একটুও বদলায়নি। ভারত-পাকিস্তানের চিরাচরিত দ্বন্দ্ব। কিন্তু যে জায়গার কথা আমরা বলছি, সেখানে আধার কার্ডে ঠিকানা দেওয়া ‘পাকিস্তান’! অথচ দেশ বলছে ভারত! ব্যাপারটা কী? বেআইনি অনুপ্রবেশ, না অন্য কিছু?
না, কোনোটাই নয়। আধার কার্ডেও ঠিকই লেখা আছে, আর বাসিন্দারাও নিজেদের ভারতীয়ই বলছেন। এমনই চমকপ্রদ গল্প ‘পাকিস্তান’-এর। তবে এই পাকিস্তান কোনও দেশ নয়। ভারতের ভেতরেই রয়েছে এর অস্তিত্ব। বিহারের পূর্ণিয়া থেকে ৩০ কিমি দূরের একটা ছোট্ট গ্রাম। যেটা কিনা শ্রীনগর ব্লকের অভ্যন্তরে।
কিন্তু এমন নামকরণ কেন? এর পেছনে রয়েছে দেশভাগের স্মৃতি। এখন যেখানে পাকিস্তান গ্রাম, সেখানে একটা সময় মুসলিমরাই বসবাস করত। তখন অবশ্য গ্রামের কোনও নাম ছিল না। ’৪৭-এ দেশভাগের পর এখানকার মুসলিমরা সবাই চলে যায় পূর্ব পাকিস্তানে, অর্থাৎ এখনকার বাংলাদেশে। ফাঁকা গ্রামে এসে বসত তৈরি করে স্থানীয় আদিবাসী, গ্রামবাসীরা। তখন সেই মুসলিম প্রতিবেশীদের স্মৃতিতেই গ্রামের নাম হয়ে যায় ‘পাকিস্তান’। যেটা আজও মোছা যায়নি।
এতদিন কোনও সমস্যা হয়নি এই নিয়ে। নাম বদলেরও প্রশ্ন আসেনি। কিন্তু এখনকার প্রবল জাতীয়তাবাদের হাওয়া এই পাকিস্তানেও এসে লেগেছে। কিছু গ্রামবাসী নাম বদলের পক্ষে জোরালো সওয়াল করছেন। তাঁদের বক্তব্য, অনেক সময়ই তাঁদেরকে কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় এর জন্য। ‘পাকিস্তান’ বদলে গ্রামের নাম ‘বিরসা নগর’ করা হোক, দাবি উঠছে সেখানে। এখনও বদল হয়নি নামের। তাই, এখনও ভারতের বুকে বেঁচে আছে এক টুকরো ‘পাকিস্তান’।