একদিকে যখন রোজগারের অভাবে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠেছে মানুষের, তখনই উঠে আসছে লকডাউনের আরেকটি দিক। এই সুযোগে একটু একটু করে সুস্থ হয়ে উঠছে পরিবেশ। তবে এমন যদি হত, লকডাউনের সমস্ত ব্যবস্থা বজায় রেখেও বিকল্প রোজগারের সুযোগ থাকত কর্মহীন শ্রমিকদের সামনে! এমনই এক আশ্চর্য পরিকল্পনা নিয়ে হাজির হয়েছে পাকিস্তান সরকার। কর্মহীন শ্রমিকদের রোজগারের সুযোগের সঙ্গে আছে দেশজুড়ে বৃক্ষরোপণের কর্মসূচি। পাকিস্তান সরকার এই প্রকল্পের নাম দিয়েছে 'টেন বিলিয়ন ট্রি সুনামি' কর্মসূচি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রতি বছর দশ বিলিয়ন করে পাঁচ বছরে ৫০ বিলিয়ন বৃক্ষের চারা রোপণ করবে পাকিস্তান সরকার। আর এই কাজের জন্য তাঁরা বেছে নিয়েছেন মহামারীর ফলে কাজ হারানো শ্রমিকদেরকেই।
বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের দাপটে উৎপাদন ব্যবস্থা একেবারেই বন্ধ। সেইসঙ্গে রোজগারের পথ হারিয়েছেন অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষ। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলির অবস্থা রীতিমতো ভয়াবহ। মহামারীর দোসর হয়ে হানা দিয়েছে দারিদ্র্য আর অনাহার। এমন সময় পাকিস্তান সরকারের উদ্যোগ রীতিমতো নজর কেড়েছে। ইতিমধ্যে ৬৩ হাজার কর্মহীন শ্রমিকের জন্য বিকল্প জীবিকার সুযোগ এনে দিয়েছে এই কর্মসূচি। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেই বৃক্ষরোপণ ও তার রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে পারবেন জঙ্গল কর্মীরা। ফলে রোজগারের সুযোগও হল, আবার সংক্রমণের আশঙ্কাও থাকলো না। সেইসঙ্গে পরিবেশের প্রশ্নটি তো রয়েছেই।
২০১৮ সালের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় গৃহীত এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির ফলে গ্রামাঞ্চলের অসংখ্য মানুষ উপকৃত হবেন বলেই মনে করছে পাকিস্তান সরকার। ইতিমধ্যে ২০১৭ সালে খাইবার প্রদেশে রিফরেস্টেশন কর্মসূচির ফলে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষের জীবিকার সুযোগ সম্ভব হয়েছে। সারা দেশজুড়ে ব্যাপক মাত্রায় এই কর্মসূচিতে এগিয়ে নিয়ে যেতেই নেওয়া হয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা। আর করোনা মহামারীর মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনা এই কর্মসূচিকে শেষপর্যন্ত একভাবে সাহায্য করছে বলেই মন্তব্য করেছেন পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা মালিক আমিন আসলাম। তাঁর কথায়, লকডাউনের সময় বহু শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে তাঁদের এই কাজে ব্যাবহার করে অতি দ্রুত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনো কঠিন হবে না।
Powered by Froala Editor