কথায় বলে, ‘বয়স শুধু মনের ধর্ম’। ব্যাপারটা একদমই ঠিক। সত্তরের কোঠা পেরোলেই হাজার একটা রোগের ঠেলায় আমরা কাবু হয়ে যাই। যত না শারীরিক, তার থেকে বেশি মনের। বৃদ্ধ হবার অনেক আগেই যেন ‘বৃদ্ধ’ হয়ে পড়ি। কিন্তু ব্যতিক্রমও আছে। এই যেমন পদ্মম নায়ারের কথাই ধরুন। এখনও রুটিন মেনে নিজের কাজ করতে বসেন সকালে। কাজ বলতে আর কিছুই নয়; শাড়ির ওপর রং আর তুলি দিয়ে নিজের দুনিয়া তৈরি করা। সেটাই তাঁর শখ। ওহ, বলে রাখা ভালো— সদ্যই তিনি নিজের ১০০তম জন্মদিন উদযাপন করেছেন!
ত্রিশূরে জন্ম নেওয়া পদ্মম নায়ার ছোটো থেকেই আঁকতে ভালবাসতেন। ধীরে ধীরে সেটাই তাঁর নেশা হয়ে ওঠে। হ্যান্ডিক্রাফট থেকে আঁকা, এমব্রয়ডারি— হেন কোনো জিনিস নেই যা তিনি চেষ্টা করেননি। আঁকার সঙ্গে সেলাইয়ের দিকেও একটা সময় মনোনিবেশ করেছেন। যেভাবেই হোক নিজের সৃষ্টিকে মেলে ধরা চাই তাঁর। তবে পেশাগত দিকে কখনও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেননি। তারপর যা হয়; বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর মুম্বাই চলে আসেন। পরবর্তীকালে পুনেতে মেয়ের সঙ্গে চলে আসেন। এখন সেখানেই থাকেন তিনি।
পুনেতে এখনও চলছে আঁকার কাজ। থামতে যে জানেন না পদ্মম নায়ার। সদ্য চলে গেল শতবর্ষ। জীবনে নানা ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন। কিন্তু রং-তুলির হাত ছাড়েননি। রোজ সকালে উঠে খবরের কাগজ পড়ার পরেই বসে যান শাড়ির ওপর তুলি বোলাতে। ফুটে ওঠে একের পর এক অপূর্ব সব চিত্র। খদ্দেরও আসে সেসব কিনতে। পাঁচ সন্তান, সাত নাতি-নাতনি, তাঁদের আবার চার সন্তান— সব মিলিয়ে ভরা সংসার। কিন্তু নিজেকে বিশ্রাম দিতে রাজি নন। যে কদিন সুস্থ আছেন, কাজ করে যেতে চান পদ্মম নায়ার। তাতেই যে সার্থকতা!
Powered by Froala Editor