কয়েক মাস আগের ভয়াবহ আগুনে আমাজনের জঙ্গলের অধিকাংশ পুড়ে খাক হয়ে গেছে, মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েছে কয়েকশো প্রজাতির প্রাণী। আর এর মধ্যেই প্যানথেরা নামক গ্লোবাল ওয়াল্ড ক্যাট কনসারভেশন অরগানাইজেশান আরও একটি ভয়াবহ তথ্যের হদিশ দিল।
প্রায় ৫০০ জাগুয়ারের জীবন ইতিমধ্যে শেষ করেছে আমাজনের আগুন। আগুনের ফলে ধ্বংস হয়েছে বনভূমি, নষ্ট হয়েছে বাস্তুতন্ত্র, তাই বহু জাগুয়ার এখনও ঘরছাড়া। বলিভিয়ার প্রায় কুড়ি লক্ষ জমি এই জাগুয়ারদের চারণভূমি।
ওই সংস্থাটি জানায়, যতক্ষণ না আমাজনে বৃষ্টি হবে এই ভাবেই জাগুয়াররা ঘরছাড়া হবে। খাদ্যের অভাবে লোকালয়ে ঢুকে গৃহপালিত পশুপাখিদের আক্রমণ করবে এরা। এরকম চলতে থাকলে স্থানীয় মানুষ এবং শিকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ অবশ্যম্ভাবী।
১৭ সেপ্টেম্বর অবধি রিপোর্টে জানা গেছে যে, ৫০০টি জাগুয়ার মারা গেছে আমাজনে। ব্রাজিলিয়ান ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চের সাহায্য নিয়ে প্যানথেরার গবেষকরা পুড়ে যাওয়া বনভূমিতে জাগুয়ার গণনা করছেন। এ মুহূর্তে প্রতি একশো কিমিতে দুটি করে জাগুয়ারের হদিশ পাওয়া যাচ্ছে যা স্বাভাবিকের চেয়ে অত্যন্ত কম। প্যানথেরার দক্ষিণ আমেরিকার শাখার ডিরেক্টর এস্তেবান পায়ান জানান, বৃষ্টি হওয়া অবধি এদের জঙ্গলে ফেরার অপেক্ষা করতে হবে।
প্রায় আট রকম জাগুয়ার বলিভিয়ার এই অংশে দেখা যায়। যেমন পুমা কনকালার, লিওপারদাস পারডালিস, হারপেইলুরাস ইয়েগুয়ারাউন্দি, লিওপারদাস জিওফ্রোয়ি ইত্যাদি। প্যানথেরার গবেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে এই বিপুল সংখ্যক জাগুয়ার যদি লোকালয়ে আসে এবং গরু, ছাগল, ভেড়া ধরে খেতে শুরু করে তাহলে শিকারীরা অথবা স্থানীয় মানুষ এদের মেরে ফেলবে।
জি পি এস কলার পরানোর ফলে প্যানথেরার গবেষকরা কিছু পিউমা আর অকেলট-কে পালাতে দেখেছেন আগুন থেকে। তাঁদের বক্তব্য, অবিলম্বে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। ব্যবসায়ীদের কোনো প্রকার জমিতে বাড়ি ঘর করা থেকে আটকে বনভূমি সংরক্ষণ করতে হবে। একসময় জাগুয়ারের সবথেকে বড়ো প্রবেশপথ ছিল বলিভিয়া। সেই সব ফিরিয়ে আনার লড়াইয়ে নেমেছে প্যানথেরা নামক এই সংস্থা।
আমাজনকে তার নিজের মতো করে গড়ে তুলতে যে কোনো প্রকার ভাবেই পরিবেশ বিষয়ে সচেতন হওয়াই আমাদের বর্তমান লক্ষ্য হওয়া উচিৎ।