প্রকৃতির কোলে পড়াশোনা! শুনতে ভালো লাগলেও, এমন ঘটনার সঙ্গে অভ্যস্ত নয় অধিকাংশ বাঙালিই। অথচ বহুকাল আগে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে চালু করেছিলেন এমন শিক্ষাব্যবস্থা। যেখানে বদ্ধ ক্লাসরুমে নয়, খোলা আকাশের নিচে, গাছের ছায়ায় বসে চলত পড়াশোনা। পুঁথিগত শিক্ষায় আবদ্ধ না থেকে, হাতেকলমে পৃথিবীর সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে দেওয়ার এই শিক্ষা হারিয়েই গিয়েছিল প্রায়। সম্প্রতি বিভিন্ন স্কুলে আবারও শোনা যাচ্ছে তেমন উদ্যোগের কথা।
আজ, ৭ নভেম্বর, বিশ্বজুড়ে অসংখ্য স্কুলে পালিত হচ্ছে ‘আউটোডোর ক্লাসরুম ডে’। যেখানে চার দেওয়ালের বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে নিজেদের মিলিয়ে দিতে পারছে কচিকাঁচারা। হয়ে উঠছে প্রকৃতিরই একটি অংশ। সে গাছ লাগানো হোক, কিংবা খেলাধুলা – খোলা আকাশের নিচে এই সম্পর্ক স্থাপন যে কতটা জরুরি, তা উপলব্ধি করেছেন অনেক শিক্ষাবিদই।
বছর সাতেক আগে লন্ডনের কয়েকটি স্কুলে প্রথম চালু হয় এই উদ্যোগ। তারপর বছর পাল্টেছে, সচেতন হয়েছেন অনেকেই। পৃথিবী তথা পরিবেশের সংকট যখন তীব্রতর হচ্ছে ক্রমশই, আরও বেশি করে বোঝা যাচ্ছে এমন উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা। শৈশব থেকেই প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে যদি বেড়ে ওঠে কেউ, একদিন এমন প্রজন্ম আসবে যখন আলাদা করে সচেতনতা তৈরির দরকার হবে না। বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার স্কুলে তাই আজ আউটডোর ক্লাসরুম ডে উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। বাদ নেই ভারতও। কলকাতারও সামান্য কয়েকটি স্কুল এগিয়ে এসেছে এই উদ্যোগে।
তবে বছরের নির্দিষ্ট একদিন নয়, প্রয়োজন প্রতিদিনই এমন ব্যবস্থা চালু করা, যাতে শিশুরা প্রকৃতিকে নিজেদের বন্ধু ভাবতে শেখে। তাহলেই আগামীতে নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।