‘প্যারাসাইট’ শব্দটার আভিধানিক অর্থ আমি জানতাম কিন্তু শব্দটার সঙ্গে খুব একটা বেশি পরিচয় আমার ছিল না। কথা বলার সময় বা ভাবনা চিন্তা করার সময় শব্দটার খুব একটা ব্যবহার আমি করতাম না। কিন্তু কিছুদিন আগে ফেসবুকে কানহাইয়া কুমার আর অমিতাভ সিনহা নামে বিজেপির একজন প্রবক্তার জেএনইউ বিষয়ক একটা ডিবেট দেখছিলাম। তাতে একেবারে শেষের দিকে অমিতাভবাবু হঠাৎ বলে বসলেন যে, ‘জেএনইউ-কে কে প্যারাসাইট মুক্ত করা হবে।’ সঞ্চালক আর কানাহাইয়া দুজনেই এই কথাটার তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন। প্রশ্ন ছিল যে ‘ছাত্রছাত্রীরা কি প্যারাসাইট?’ অমিতাভ বাবু তার কোনো সদুত্তর দেননি। সেটার অবশ্য খুব একটা আশাও ছিল না।
যাই হোক, তারপরেই কাকতালীয় ভাবে আমি বং জুন হো-র ‘প্যারাসাইট’ ছবিটা দেখলাম। ছবিটা কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা ফিল্মের শিরোপা পেয়েছে। বং-ও আমার প্রিয় পরিচালকদের মধ্যে একজন। বড় পর্দায় ছবিটা দেখা। সব মিলিয়ে দেখার অভিজ্ঞতাটা ছিল অতুলনীয়। তারপর থেকেই প্যারাসাইট শব্দটা আমরা চিন্তা জগতের মধ্যে প্রবেশ করে গেল। প্যারাসাইট আসলে কী?
বিজেপি-র কথা অনুযায়ী, সেইসব ছাত্রছাত্রী যারা জনগণের ভর্তুকির টাকায় কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করে সরকারের বিরোধিতা করছে তারা ‘প্যারাসাইট’, ‘পরজীবী’, ‘সমাজের কীট’। আর সরকারের তাঁবেদারদের কথা অনুযায়ী প্যারাসাইট হল সেই সব ছাত্র-যুবরা যারা ‘ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ায়’। এদিকে ইন্টারেস্টিং ব্যপার হল যে ‘প্যারাসাইট’ ছবির পরিচালক বং যখন ১৯৮৮ সালে ইয়োনসেই ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা শুরু করেন তখন সাউথ কোরিয়াতে ‘জুন ডেমোক্রেসি মুভমেন্ট’ চলছিল পুরোদমে। বং সেই আন্দোলনে অ্যাক্টিভলি অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং তৎকালীন সরকারকে নির্বাচন পরিচালনা করতে এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক সংস্কার প্রতিষ্ঠা করতে বাধ্য করেছিলেন। যার ফলে বর্তমান দক্ষিণ কোরিয়ার ষষ্ঠ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। সেই বং-এর ছবি গতবছর কানে পাম দি’অর এবং আজকে ৪টি ক্যাটেগরিতে (শ্রেষ্ঠ ছবি, শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ অরিজিনাল স্ক্রিনপ্লে ও শ্রেষ্ঠ আন্তর্জাতিক ছবি) অস্কার পুরস্কার পেল। তাদের সেইসময়কার সরকার বং-কে ‘প্যারাসাইট’ বলেছিল কিনা জানা নেই। হয়তো বলেছিল। ফ্যাসিস্টরা যাদের ‘প্যারাসাইট’ বলছে আসলে তারা হল প্রতিভাবান। তারা মেরুদণ্ড সোজা রেখে ক্ষমতাকে প্রশ্ন করতে পারে, না বলতে পারে, স্রোতের বিপরীতে হাটতে পারে, দেশে বিদেশে সম্মান পেতে পারে এবং কখনো কখনো পৃথিবীর সর্বোচ্চ সম্মানও পেতে পারে।
সত্যজিৎ রায় একদা পরিচালক জ্যঁ লুক গোদার সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছিলেন যে ‘গোদার হল সেই প্রতিভা, যে প্রতিভা সর্ব কালে সর্ব দেশেই বিরল’। সেই গোদারও কিন্তু বিপ্লবী পরিচালকই ছিলেন। আর ঋত্বিক ঘটক তার ‘কোমল গান্ধার’ ছবিতে একটা যায়গায় বলেছিলেন যে গণ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হওয়াটা শিল্পীদের কর্তব্য। শিল্পটা পুতুপুতু করার যায়গা হয়। আর তিনি তার জীবন দিয়েই আমাদের এটাও বুঝিয়েছিলেন যে যেই শিল্পী গণ অন্দোলনের মধ্যে থেকে উঠে আসে এবং আজীবন গণ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থেকে শিল্প কর্ম করেন তাঁর শিল্পই শ্রেষ্ঠ শিল্প। তাঁবেদারি করা বা চোখ-কান বন্ধ রেখে নিজের কাজ করাটা প্রকৃত শিল্পীর কাজ নয়। দেশের এই অস্থির সময় বং আরেকবার আমাদের সেটা মনে করিয়ে দিলেন। বং-কে ধন্যবাদ। বং- এর ‘প্যারাসাইট’ ছবিটার রিভিউ আমি করব না। কারণ সেটা করতে গেলে সেই দেশের সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিকে ভালো ভাবে জানতে হবে। দক্ষিণ কোরিয়া বিষয়ে ততটা আমার জ্ঞান নেই। তাই ছবির মূল কয়েকটা বিষয় নিয়ে কিছু কথা বলব।
ছবিটি ব্ল্যাক-কমেডি-থ্রিলার ঘরানার ছবি। ছবিতে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওলের দুটি পরিবারের কথা বলা হয়েছে যারা একে অপরের সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে। একটি পরিবার হল কিম কি-টিক নামক একজন মধ্যবয়স্ক মানুষের পরিবার। পরিবারের প্রত্যেকেই প্রায় বেকার। টাকার অভাবে ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। তারা টুকটাক কিছু কাজ করে কোনো রকমে সংসার চালায়। নিচু এলাকায় সেমি বেসমেন্টের জাতীয় একটা খুপরি বাসায় তারা থাকে। সেখানে সূর্যের আলোও ভালো করে পৌঁছোয় না। কোরিয়ায় এই জায়গা গুলোকে বলে ‘বানজিহা’। অনেকটা নর্দমার কীটের মত অন্ধকারে এরা জীবনযাপন করে। প্রাচুর্যে ভরা সিওলের একটি অন্ধকার দিক। আরেকটি পরিবারের মালিক হলেন পার্ক ডং-ইক নামক একজন প্রবল বিত্তশালী ব্যক্তি। আর্কিটেক্ট। প্রাচুর্যে ভরা সিওলের সেই প্রতিচ্ছবি যেটা বহির্বিশ্ব জানে। কিম পরিবারের চাই চাকরি আর পার্ক পরিবারের চাই সস্তার মজুর। ফলে প্রথমে জালি মার্কসিট দেখিয়ে পার্কের স্ত্রীকে কে ইমপ্রেস করে কিমের ছেলে কি-উ পার্কের মেয়ের প্রাইভেট টিউটর হয়ে যায়। তারপর মিথ্যে কথা বলে কি-উ ওর বোনকে পার্কের ছেলের আঁকার দিদিমণি হিসেবে চাকরি পাইয়ে দেয়। তারপর বিভিন্ন অসৎ উপায়ে ওরা ওদের বাবা-মাকে ড্রাইভার ও হাউস কিপারের কাজে ঢুকিয়ে দেয়। কিন্তু অসৎ উপায়ে ঢুকলেও তারা কাজ খুব ভালোভাবেই করে। কিন্তু একটা পয়েন্টে যখন পার্করা সপরিবারে বেড়াতে যায় তখন কিম-রা বাড়িটাকে নিজদের বাড়ি মনে করে সেটা ভোগ করতে শুরু করে এবং প্রবল পার্টি করতে থাকে। সেই মুহূর্তে বাড়ির আগের হাউস কিপার ভদ্রমহিলা গুক মুন-গ্যাংগ যার চাকরি কিম-দের কারণে বিনা কারণে চলে গেছিল তিনি এসে উপস্থিত হন। এবং তখনই ছবির আসল রহস্য ও ক্রাইসিসের মুহূর্ত উপস্থিত হয়। দেখা যায় যে বাড়িটির আন্ডার গ্রাউন্ডে একটি গোপন কক্ষ আছে। পার্ক পরিবার আসার আগে যারা এখানে থাকত তারা এটা বানিয়েছিল। মূলত উত্তর কোরিয়া আক্রমণ করলে বা পাওনাদারদের হামলা করলে সেই সময় লুকিয়ে থাকার জন্য এই গোপন ঘরটা বানানো হয়েছিল(কোরিয়ায় অনেক বিত্তশালীরাই এরকম ঘর বানিয়ে থাকেন)। সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার ছাড়া মানুষের বেসিক প্রয়োজনের সবকিছুই আছে। বর্তমানে এর খবর একমাত্র মুন-গ্যাংগই জানে। এবং সেখানে সে তার বেকার ও অপদার্থ স্বামীকে সকলের অজান্তে ৩-৪ বছর ধরে লুকিয়ে রেখেছে। কিন্তু অকস্মাৎ চাকরি চলে যাওয়ার ফলে ব্যাপারটা কেঁচে গেছে। তার স্বামী ওখানেই বন্দি হয়ে পড়ে আছেন। খাবার পাচ্ছেন না। ফলে সে এসেছে। স্বামীকে উদ্ধার করতে কিন্তু আসেনি। বরং এসেছে কিম-এর স্ত্রীকে অনুরোধ করতে, যাতে তার স্বামীকে সে সময় করে মাঝে মাঝে একটু করে খাবার দিয়ে যায়। কারণ তাদের কোনো ঘরবাড়ি নেই, চাকরি নেই, বাজারে অনেক ধার আছে ইত্যাদি। খাই খরচ বাবদ সামান্য কিছু টাকাও মহিলা দিতে চায়। কিন্তু কিমের স্ত্রী রাজি হয় না। এই নিয়ে প্রচুর কমেডি ড্রামা হয়। আমাদের মনে হয় যেন এরা সকলেই একেকজন আস্ত অপদার্থ ও প্যারাসাইট। পার্কেদের মত বিত্তশালীদের উচ্ছিষ্টে কোনো রকমে নিজেদের প্রতিপালন করছে। কিন্তু তলিয়ে দেখলে বোঝা যায় যে পার্কদের মত বিত্তশালীরাও কম প্যারাসাইট নয়। কিম-দের ছাড়াও এদেরও এক মুহূর্তও চলবে না। বাড়ির কাজ চলবে না, ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা চলবে না, গাড়ি চলবে না, কিচ্ছু চলবে না। পার্কদের মিথ্যে কথা বলে চাকরি জোটাতে কিম-রা সমর্থ হয় এই কারণে নয় যে পার্করা ইনোসেন্ট বরং এই কারণে যে পার্করা অসহায় ও অপদার্থ। নিজেদের কাজ করার কোনো ক্ষমতাই তাদের নেই। ফলে সম্পর্কটা ভরসার নয়। সম্পর্কটা বাধ্যবাধকতার। এই জায়গায় ছবিটা একটা দার্শনিক ও রাজনৈতিক প্রশ্নর সামনে আমাদের দাঁড় করিয়ে দেয়। সেটা হল যে আজকের যুগে ‘রাজা কে হবে’। যারা এতদিন ধরে রাজপাট চালাচ্ছে অর্থাৎ যাদের হাতে ক্ষমতা আছে তারা নাকি যারা রাজা হওয়ার আসল যোগ্য অর্থাৎ যাদের পরিশ্রম করার ক্ষমতা আছে সেই বঞ্চিত মানুষেরা?
ছবির আরেকটা যায়গা মারাত্মক। যেখানে পার্ক পরিবার ওই দিনই আচমকা বাড়ি ফিরে আসে যেদিন ওইসব ঘটনা হচ্ছিল। কিমরা ওই বাড়িতে কোনোরকমে লুকিয়ে থাকে এবং রাতের অন্ধকারে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে চোরের মতো পালিয়ে আসে। নিজেদের বাড়ি ফিরে দেখে যে বৃষ্টির জলে ভেসে গেছে ওদের ঘরদোর। আশ্রয় নেয় একটি ক্যাম্পে। সমাজের প্রতি অসম্ভব রাগ ও ঘৃণা ফুটে ওঠে ওদের চোখে-মুখে। এর আগে অবধি আমরা একটা ভালো কোরিয়ান ডার্ক কমেডি ছবি দেখছিলাম। এই মুহূর্ত থেকে সেটা হয়ে ওঠে আন্তর্জাতিক। প্রবল ভাবে রাজনৈতিক। হয়ে ওঠে বিশ্ব চলচ্চিত্রের এক শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। জাফর পানাহি, মাখমালবাফ, কিম কি ডুক ইত্যাদি বিশ্ববরেণ্য পরিচালকদের কথা মাথায় রেখেই বলছি এমন ছবি আমি বহু যুগ দেখিনি। যেটা দেখার জন্য পায়ে হেঁটে কোরিয়া যেতে হলেও আমি যেতে প্রস্তুত ছিলাম। ছবির শেষটা মারাত্মক। আকস্মিক একটি ঘটনায় এক ব্যক্তি কিম-এর মেয়ের বুকে ছুরি মেরে দেয়। কিম এর স্ত্রী সেই ব্যক্তিকে মেরে ফেলে। মি.পার্ক যখন কিম এর মেয়েকে গাড়ি করে হসপিটাল নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন বিনা প্ররোচনায় কিম হঠাৎ মি.পার্কের বুকে ছুরি মেরে তাকে হত্যা করে এবং পালিয়ে যায়। আপাত ভাবে দেখলে পার্ককে খুন করার কোনো কারণ কিম-এর নেই। পুলিশও কোন মোটিফ খুঁজে বের করতে পারে না। উত্তর পায় না। ছবিতেও কিছু বলা নেই। কারণ খুঁজতে গেলে যেতে হবে সমাজের অনেকটা গভীরে। খুঁজতে হবে মানুষের শত সহস্র বছরের বঞ্চনার ইতিহাসের মধ্যে ঢুকে গিয়ে। তাহলে পাওয়া যাবে। অনেকটা মৃণাল সেনের ‘কলকাতা ৭১’ এর মতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তো প্রায় সব কিছুই বলে গেছেন। তাঁর ‘হে মোর দুর্ভাগা দেশ’ কবিতায় এর উত্তর তিনি দিয়ে গেছেন। যারা পড়েননি তারা অনলাইনে পড়ে নিলে উত্তরটা পেয়ে যাবেন আশা করি। শেষ স্তবকে কবি বলছেন-
“দেখিতে পাও না তুমি মৃত্যুদূত দাঁড়ায়েছে দ্বারে,
অভিশাপ আঁকি দিল তোমার জাতির অহংকারে।
সবারে না যদি ডাক',
এখনো সরিয়া থাক',
আপনারে বেঁধে রাখ' চৌদিকে জড়ায়ে অভিমান--
মৃত্যুমাঝে হবে তবে চিতাভস্মে সবার সমান”।
ছবির শেষে দেখা যায় যে কিম ওই বাড়ির গোপন কাল কুঠুরিতে লুকিয়ে আছে। পুলিশের কাছ থেকে, সমাজের কাছ থেকে, এমনকি নিজের পরিবারের কাছ থেকেও। কিন্তু তাঁর ছেলে একদিন সেটা আবিষ্কার করে। সে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে যে সে প্রচুর টাকা রোজগার করবে এবং একদিন এই বাড়িটা ও কিনে নেবে। সেদিন আর ওর বাবাকে এইভাবে চোরের মত লুকিয়ে থাকতে হবে না। নির্ভয়ে এই বিশাল বাড়িটার মধ্যে সে ঘুরে বেড়াতে পারবে। বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারবে। সে মনে মনে তাঁর বাবার উদ্দেশ্যে বলে ‘Take care until then’। আমরাও সেই দিনটার অপেক্ষায় আছি। যেদিন গরিবের হাতে থাকবে পর্যাপ্ত অর্থ। যা দিয়ে সে তাঁর জীবনকে নিজের ইচ্ছে মত চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। অন্ধকার কাল কুঠরি থেকে বেড়িয়ে এসে দাঁড়াতে পারবে মুক্ত আকাশের নিচে। ভোগ করতে পারবে পৃথিবীর এই বিপুল ঐশ্বর্য ও সম্পদ। যা বর্তমানে কতিপয় মানুষের হাতে বন্দি।
কিন্তু এটা হবে কীভাবে? দেশ তো চালায় সরকার। তারা কখনই এটা হতে দেবেনা। জেএনইউ, যাদবপুর সহ বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদী ছাত্রছাত্রীরা তো দেশ চালাবে না। কিন্তু একটু তলিয়ে ভাবলে বোঝা যাবে যে, সময় এসেছে এই অবস্থার বদল করার। কারণ ছাত্রছাত্রীরা প্যারাসাইট নয় বরং সরকারের সেইসব নেতা-কর্মী আর বিত্তশালীরাই হল আসল প্যারাসাইট। মানুষের সমর্থন ছাড়া তাদের এক মুহূর্তও চলে না কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর তারা এক মুহূর্তের জন্যও আর মানুষের কথা ভাবে না। বরং তারা ঠিক করে দেয় যে সাধারণ মানুষ কী বলবে, কী খাবে, কী পরবে। এই সব প্যারাসাইটদের থেকে সমাজকে মুক্ত করতে হবে। ছিনিয়ে নিতে হবে নিজেদের অধিকার। সিনেমা সেটা পারবে না। কোন শিল্পই সমাজ পরিবর্তন করতে পারেনা। একটা দিশা দেখাতে পারে মাত্র। সেটা করতে হবে আমাদেরই। খ্যাপা মোষের ঘাড় ভেঙে তাকে তাড়ানো যদিও খুব একটা সহজ কাজ নয়। কারণ তার শিং-এ মৃত্যু বাঁধা থাকে। তবুও তাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে হয়। দুনিয়াকে এটা জানানোর জন্য যে, কেউ বা কেউ কেউ অন্তত ছিল যে বা যারা মোষের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। পালিয়ে যায়নি।