মন্দার বাজারে ধ্বসে পড়ল ভারতীয় সমবায়ী ব্যাঙ্কগুলিও। এ মুহূর্তে বিশ্ব অর্থনীতির পাশাপাশি ধুঁকছে ভারতের অর্থনীতিও। আর এমন কঠিন সময়ে দাঁড়িয়ে দুটি বড় মাপের ব্যাঙ্কে টাকা লেনদেন করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া।
আগামী ছ’মাস পাঞ্জাব এবং মহারাষ্ট্র সমবায়ী ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করল আরবিআই। এই নির্দেশ অনুসারে, প্রতি মাসে নিজেদের অ্যাকাউন্ট থেকে মাত্র ১০০০ টাকা তুলতে পারবেন গ্রাহকেরা। কারো কারো ক্ষেত্রে হয়ত বেতনের সম্পূর্ণ টাকাই ঢোকে এই ব্যাঙ্কগুলোতে। তাই মাত্র এই কটা টাকা তুলে কীভাবে সারা মাস চালাবেন, তা নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত সাধারণ মানুষ।
খবর অনুযায়ী, ব্যাঙ্কের পুঁজিতে পড়েছে বেশ খানিকটা টান। আর তাই এই নির্দেশিকা জারি করতে বাধ্য হয়েছে আরবিআই। ১৯৪৯ সালের ব্যাঙ্কিং আইন অনুসারে, গ্রাহকদের জন্য অথবা নির্দিষ্ট ব্যাঙ্কের জন্য এই পদক্ষেপ লাভজনক হবে মনে করলে আরবিআই কোনো ব্যাঙ্ককে এই ধরনের নির্দেশ দিতে পারে।
কোনো নির্দিষ্ট ব্যাঙ্কের সঠিক পরিচালনার প্রয়োজনেও জারি করা হতে পারে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা।
এই মুহূর্তে পাঞ্জাব এবং মহারাষ্ট্র সমবায়ী ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নতুন কোনো ধার (লোন) না দিতে, কোনোরকম লগ্নি এবং দায় না জোগাড় করতে, কোনো বড় অর্থ প্রদান অথবা সম্পত্তির লেনাদেনা না করতে।
এই খবর আকস্মিক ভাবে প্রকাশিত হওয়ার পরেই বিতর্ক শুরু হয়েছে টুইটারে। প্রধানমন্ত্রীর ডিজিট্যাল মাধ্যমে লেনাদেনা করার প্রসঙ্গ তুলে এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছেন বেশ কিছু নেটিজেনরা। এরকম হঠাৎ করে পাঞ্জাব এবং মহারাষ্ট্র সমবায়ী ব্যাঙ্ক সীমিত লেনদেনের আদেশ জারি করায় অসুবিধের মুখে পড়েছেন সবাই। বাদবাকি টাকা এখনই ফেরত চাইছেন তাঁরা।
কেউ কেউ জানাচ্ছেন, তাঁদের সারা জীবনের পুঁজি, মেয়েদের বিয়ের জন্য জমিয়ে রাখা, অথবা বিভিন্ন কারণে ভবিষ্যতের জন্য জমিয়ে রাখা টাকা এক রাতের মধ্যে হাতছাড়া হয়ে গেল। চরম বিপদের মুখেও তাঁরা গচ্ছিত টাকা তুকতে পারবেন না অ্যাকাউন্ট থেকে। এই অবস্থায় কী করবেন কিছু বুঝতে পারছেন না গ্রাহকেরা। গ্রাহকদের এই আবেদন অথবা অভিযোগের কোনও প্রসঙ্গেই এখনও পর্যন্ত ব্যাঙ্ক অথবা সরকারের তরফে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
আশা করা যায়, খুব শীঘ্রই সরকার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করলে সাধারণ মানুষ দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাবেন।