“কোভিড পরিস্থিতিতে প্রত্যেকেই স্বাস্থ্যের বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন হয়ে উঠেছেন। ফিটনেস এবং ইমিউনিটি বাড়ানোর কথা ভাবছেন সবাই। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না ঠিক কীভাবে এগোতে হবে।” বলছিলেন ঐশিকী মুখার্জি। মাত্র ২১ বছর বয়সে তাই ঐশিকী নিজেই এগিয়ে এসেছেন এই বিষয়ে প্রশিক্ষণের কাজে। আগামী ৩ নভেম্বর উদ্বোধন হতে চলেছে ঐশিকীর স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ উদ্যোগ 'ক্যালিস্থেনিক্স'। তবে ক্যালিস্থেনিক্সের পাশাপাশি যোগা, ওয়ার্ক-আউট এবং লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্টের বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এখানে।
সদ্য কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন ঐশিকী। আর এর মধ্যেই শুরু করতে চলেছেন নিজস্ব ব্যবসায়িক উদ্যোগ। ঐশিকীর এই উদ্যোগে সমানভাবে সঙ্গত দিয়ে চলেছেন তাঁর মা তনয়া মুখার্জিও। তনয়া একটি বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। তিনি এর আগে বায়োকন কোম্পানিতে কাজ করেছেন। দেখেছেন একজন মহিলা উদ্যোগপতি হয়ে কিরণ মজুমদার শ কীভাবে এগিয়ে চলেছেন। তাঁর কথায়, “আমার নিজের পক্ষে তো আর নিজের উদ্যোগ শুরু করা সম্ভব ছিল না। তাই সবসময়ই চেয়েছি মেয়ে কিছু একটা করুক। ঐশিকী তাই যখন তার ভাবনার কথা জানাল, আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছিলাম।”
কোভিড পরিস্থিতিতে বাড়ি থেকে বেরনোর বিষয়টা সবসময়ই আশঙ্কাজনক। তাছাড়া নানা সময়ে সরকারি নির্দেশেও জিম ও অন্যান্য ফিটনেস সংস্থাগুলি বন্ধ রাখা হচ্ছে। তাই বর্তমান পরিস্থিতির কথা ভেবেই সম্পূর্ণ অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন ঐশিকী। যদিও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে অনলাইন প্রশিক্ষণের পাশাপাশি অফলাইন ব্যবস্থাও চালু করার কথা ভেবেছেন, এমনটাই জানালেন তিনি। ফিটনেস ট্রেনিং-এর মতো একটি বিষয় অনলাইনে শুরু করার প্রসঙ্গে ঐশিকী জানালেন, “নানারকম শারীরিক সমস্যার কারণে অনেকেই ট্রেডপুলিং বা ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে ব্যায়াম করতে পারেন না। কিন্তু যোগা বা বিভিন্ন ফ্রি-হ্যান্ড ওয়ার্ক-আউট করতে তো সবাই পারেন। আর সেটা বাড়িতে বসেই করা যায়।” ক্যালিস্থেনিক্স-এ মূলত এই বিষয়গুলিকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।
বাঙালি ব্যবসায় নামতে ভয় পায়, এমন একটা কথা আজও প্রচলিত। আর বাঙালি মহিলাদের ব্যবসায়িক উদ্যোগে এগিয়ে আসা তো রীতিমতো অবাক করে। তনয়া বলছিলেন, “এখন অবশ্য অনেক মহিলাই নানারকম ব্যবসায় এগিয়ে আসছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য পরিষেবার দিকটা এখনও প্রায় পুরোপুরি পুরুষদের দখলে।” সেখানে ঐশিকীর এই উদ্যোগ নতুন প্রজন্মের আরও অনেক মহিলাকেই এগিয়ে আসতে অনুপ্রেরণা দেবে বলে আশাবাদী তিনি। যদিও ঐশিকী মনে করেন, তাঁর এই উদ্যোগ সফল হলে তবেই অন্য কাউকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার প্রশ্ন আসে। এখনই নিজেকে সফল মনে করতে রাজি নন তিনি। তাই আপাতত নিজেকে সফল করে তোলাই তাঁর লক্ষ্য। মা-মেয়ের এই মিলিত উদ্যোগ সফল হলে বহু মানুষ নিজেদের জীবনেও সুস্বাস্থ্য নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবেন।
Powered by Froala Editor