সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত এক-তৃতীয়াংশ ভিডিওই বিদ্বেষপূর্ণ, জানাচ্ছে সমীক্ষা

সারা পৃথিবী জুড়ে হিংসা, হানাহানি আর বিদ্বেষ। ইন্টারনেটে, বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যমগুলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে সেইসব ঘটনারই ভিডিও। বাস্তবে হয়তো বিদ্বেষ ততটা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেনি সমাজজুড়ে। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে সমস্তটাকেই ভীষণ বিপন্ন মনে হয়। আর বিভিন্ন সামাজিক সংস্থার নানা ধরণের নিয়মের পরেও বিদ্বেষের বার্তা ছড়িয়েই পড়ছে। ঠিক যেন সুপরিকল্পিত প্রচারমাধ্যম হিসাবে এগুলিকে বেছে নিয়েছেন ‘মৌলবাদী’রা। এমনটাই জানাচ্ছে ইংল্যান্ডের মিডিয়া রেগুলেটর অফকর্ন। সংস্থার সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে ৩৩ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন ইন্টারনেটে এইসমস্ত ভিডিও দেখতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন।

অফকর্নের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের পর সামাজিক মাধ্যমে বিদ্বেষমূলক প্রচারের সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। প্রতি তিনজন মানুষের মধ্যে একজন এই সমস্ত ভিডিও দেখতে বাধ্য হন। প্রায় সব ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে প্রচারের পিছনে কাজ করেছে কোনো অতি দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক শক্তির মদত। অফকর্নের পরিসংখ্যানে এর ভয়াবহতা সম্পর্কেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ভিন্ন ধর্ম, জাতি, বর্ণ বা ভিন্ন যৌনতার মানুষদের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য শুনতে শুনতে ২৫ শতাংশ তরুণই নিজেদের মধ্যেও বিদ্বেষকে জায়গা করে দিচ্ছে।

ইউরোপ এবং আমেরিকার ক্ষেত্রে অবশ্য সামাজিক মাধ্যমগুলির পদক্ষেপের যথেষ্ট প্রশংসা করেছে অফকর্ন। তবে আরও অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে, এমনটাই মত সমীক্ষকদের। কিন্তু ভারতবর্ষের ক্ষেত্রে বিষয়টা একটু আলাদা। প্রশ্ন উঠেছে ফেসবুকের পাবলিক পলিসি হেড আঁখি দাসের ভূমিকা নিয়েও। ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের রিপোর্ট অনুযায়ী গত ডিসেম্বর মাসে সংস্থার আভ্যন্তরীণ মিটিং-এ শাসক দলের কোনো বক্তব্যকে সেন্সর না করার প্রস্তাব রাখেন আঁখি দাস। আর এর পর থেকেই বিদ্বেষমূলক মন্তব্য বেড়ে গিয়েছে অন্তত ১৫ শতাংশ। গত ৫ বছরে এই হিসাবটা দ্বিগুণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয়, সামাজিক মাধ্যম সূত্রে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা বেড়েছে ৫ শতাংশ।

সামাজিক মাধ্যম যেমন মানুষকে কাছাকাছি এনেছে, তেমনই তার বিরূপ প্রভাব পড়তেও সময় নেয়নি। তবে হিংসা, বিদ্বেষ তো সমাজের মধ্যেও ক্রমাগত প্রচার করে চলেছেন একদল মানুষ। বাস্তবে সেইসবের সঙ্গে লড়াইটা যেমন, সামাজিক মাধ্যমেও ঠিক তাই। শুধু এই বিষয়ে সংস্থার কর্ণধাররা আরেকটু সচেতন ভূমিকা নিলে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।

আরও পড়ুন
বিশ্ব এক-চতুর্থাংশ নারীই গার্হস্থ্য যৌন হিংসার শিকার : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

Powered by Froala Editor