ঐতিহ্য আর আধুনিকতার দ্বন্দ্বে একটা শতাব্দী কাটিয়ে দিয়ে অবশেষে একে একে পিছু হটছে মানুষের পুরনো সমস্তকিছু। আর এই সময়ে যেমন কাউকে সময় জিজ্ঞাসা করলে আর হাতের কব্জির দিকে তাকায় না, পকেট থেকে মোবাইল ফোন বের করেই উত্তর দেয়; ঠিক তেমনি ছবি তোলার প্রয়োজন হলেও মোবাইল ফোনই ভরসা। আর এই প্রতিযোগিতায় এবার পরাজয় স্বীকার করে নিল একসময়ের বাজার মাত করে রাখা ক্যামেরা কোম্পানি ‘অলিম্পাস’।
দীর্ঘদিনের মাইক্রোস্কোপের ব্যবসা থেকে ক্যামেরার বাজার ধরতে বেশি সময় লাগেনি অলিম্পাস কোম্পানির। সেটা ১৯৩৬ সাল। অন্যান্য দেশের মতোই ভারতেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল এই মেটাল বডির জাপানি ক্যামেরা। এমনকি কিছু বছর আগেও সস্তা ব্র্যান্ডের ক্যামেরার থেকে অলিম্পাসের ঐতিহ্যই ছিল আলাদা। হ্যাঁ, ঠিক রাজবাড়ির ঝাড়বাতির মতো ঐতিহ্য। এখন আর ওসব চলে না। একটি মোবাইল ফোন, আর তাতেই সমস্তকিছু। এটাই যে এখন ফ্যাশান।
তবে ৮৪ বছরের ক্যামেরা ব্যবসায় ইতি টানলেও বাজার থেকে উঠে যাচ্ছে না অলিম্পাস কোম্পানি। কর্তৃপক্ষের কথায় সেই বার্তা স্পষ্ট। আগের মতোই এখনও মাইক্রোস্কোপের ব্যবসায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী অলিম্পাস। পাশাপাশি চিকিৎসার অন্যান্য কাজেও কীভাবে অপটিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট ব্যবহার করা যায়, তাই নিয়েও বিভিন্নরকম পরীক্ষা করছেন কোম্পানির গবেষকরা। এমনকি নিজেদের তৈরি ক্যামেরার লেন্স নিয়ে এখনও আশাবাদী কোম্পানি। আর তাই বাজারচলতি অন্যান্য কোম্পানির কাছে নিজেদের তৈরি লেন্স এবং অন্যান্য পার্টস বিক্রি করার সিদ্ধান্তও ভেবে দেখছেন তাঁরা। তবে অলিম্পাসের এই হঠাৎ সরে যাওয়া আরেকবার প্রমাণ করে দিল, আজকের ব্যস্ত জীবনে পিছনে তাকার একটুও সময় বাকি নেই আমাদের হাতে।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ক্যামেরার জন্য বিশেষ ইন্ডিকেটর বানালেন উপেন্দ্রকিশোর, বদলে গেল ছবি তোলার দৃষ্টিভঙ্গিও