লকডাউনের ফলে ঘরের বাইরে আর মানুষের পা পড়ছে না। এই সুযোগে নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়াচ্ছে নানা জীবজন্তু। অনেকে ঢুকে পড়ছে লোকালয়ের মধ্যেও। মে মাসের শুরুতে তেমনই এক দৃশ্য দেখা গেল ওড়িশার গঞ্জাম জেলার ঋষিকুল্যা সমুদ্রতটে। পর্যটকের অভাবে সেই বালিয়াড়ির দখল নিয়েছে অলিভ রিডল কাছিম।
মে মাসের শুরুই এই প্রাণীর ডিম ফোটার সময়। দেখতে দেখতে অসংখ্য সদ্যজাত কাছিমে ঢেকে গেছে সমুদ্রতট। আর এক এক করে সবাই এগিয়ে চলেছে সমুদ্রের দিকে। সেই কাছিমের সমুদ্রের মধ্যে সঠিক সংখ্যা আন্দাজ করা কঠিন। তবে তা যে প্রায় এক কোটির উপর, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
অলিভ রিডল কাছিম অবশ্য ওড়িশার সমুদ্রতটে কোনো নতুন প্রাণী নয়। প্রতি বছর প্রজননের সময় সমুদ্রের বুক থেকে উঠে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে কাছিম। এই প্রজাতিটির সারা পৃথিবীর জনসংখ্যার ৫০ শতাংশই ডিম পাড়ে ওড়িশা উপকূলে। আর চল্লিশ দিনের মাথায় সেই ডিম ফুটে বাচ্চা জন্মালে তারা একে একে আবার সমুদ্রে নেমে যায়। তবে এবছর দৃশ্যটা অন্যান্য বছরের থেকে আলাদা। প্রতি বছর পর্যটকদের উৎপাতে বহু ডিম নষ্ট হয়ে যায়। আর তার ফলে খুব কম সংখ্যক কাছিমই সমুদ্রে ফিরে যেতে পারে। তবে এবছর পর্যটক নেই। আর তাই সমুদ্রের ধারে সদ্যোজাত কাছিমের দল যেন আরেকটা সমুদ্রই বানিয়ে ফেলেছে।
ইতিমধ্যে সেই অসংখ্য কাছিমের সমুদ্রে ফেরার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে উঠেছে। প্রথম ভিডিওটি প্রকাশ করেন সুশান্ত নন্দ নামে এক ব্যক্তি। তাঁর হিসাব অনুযায়ী প্রায় ২ কোটি কাছিমের দল সমুদ্রের দিকে রওনা হয়েছে। এরপর আরেকটি ভিডিও প্রকাশ করে ওড়িশা ওয়াইল্ডলাইফ অর্গানাইজেশন। তাঁদের হিসাব অনুযায়ীও, সংখ্যাটা এক কোটির কম নয়। মানুষের অনুপস্থিতিতে সমুদ্রতটের নির্মল পরিবেশ যে তারা বেশ উপভোগ করতে পেরেছে, একথা বলাই বাহুল্য।