মিশরের রাজধানী কায়রো। তার ঠিক কাছেই সাক্কারার কিংবদন্তি স্টেপ পিরামিড। এবার তার আশপাশ থেকেই হদিশ মিলল মিশরের (Egypt) পঞ্চম এবং ষষ্ঠ রাজবংশের একাধিক ফ্যারাও, প্রধান পুরোহিত এবং অন্যান্য আধিকারিকদের সমাধি। যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বের প্রাচীনতম মমিও (Oldest Mummy)।
হ্যাঁ, এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এখনও পর্যন্ত মিশরের বুকে আবিষ্কার হওয়া মমিদের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন এবং ‘সবচেয়ে সম্পূর্ণ’ মমি লুকিয়ে ছিল সাক্কারার কাছেই। অবশ্য এই মমি মিশরের প্রাচীনতম হলেও, তাকে বিশ্বের প্রাচীনতম মমি বলা চলে না। কারণ, চিলিতে খুঁজে পাওয়া বেশ কিছু মমির বয়স প্রায় ৭ হাজার বছর। সেদিক থেকে দেখতে গেলে চিলির প্রাচীন সভ্যতা ও মমি তৈরির প্রথা খানিকটা হলেও এগিয়ে মিশরীয়দের থেকে।
সাক্কারার স্টেপ পিরামিডের নিকটবর্তী ১৫ মিটার গভীর একটি গর্ত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে মমিটি। চুনাপাথরের সারকোফ্যাগাসে সংরক্ষিত মমিটি আপাদমস্তক ঢাকা ছিল সোনার পাতের আবরণে। সেইসঙ্গে বাইরে থেকে সারকোফেগাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল চুন, বালি আর জলের মিশ্রণে তৈরি একটি বিশেষ পদার্থ দিয়ে। সংশ্লিষ্ট মমিটি হেকাশেপেস নামের এক ব্যক্তির। কিন্তু কে এই হেকাশেপেস? না, সেই ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারেননি গবেষকরা। তবে কার্বন ডেটিং জানাচ্ছে, মমিটির বয়স প্রায় ৪৩০০ বছর। ফলে, পঞ্চম রাজবংশের শাসনকালে এই ব্যক্তি জীবিত ছিলেন, সে-ব্যাপারে নিশ্চিত গবেষকরা।
তবে শুধু প্রাচীনতম মমিই নয়, একইসঙ্গে খুঁজে পাওয়া গেছে পঞ্চম রাজবংশের সম্রাট ফ্যারাও উনাসের অন্যতম পরিদর্শক, আধিকারিক, তত্ত্বাবধায়ক ও পুরোহিত খুনুমদেজদেফের সমাধি। পাওয়া গেছে এই একই সময়ের আরও এক পুরোহিত মেরির সমাধিও। গুপ্তবিদ্যা, ধর্মীয় আচার আচরণ এবং রাজপ্রাসাদের গোপন তথ্যের রক্ষাকর্তা ছিলেন তিনি। মিলেছে ফ্যারাও পেপি আই-এর সময়ের লেখক এবং বিচারক ফেটেকের সমাধিও।
সংশ্লিষ্ট ৪টি মমি ছাড়াও, সাক্কারার এই প্রত্নক্ষেত্র থেকে পাওয়া গেছে একাধিক প্রত্নসামগ্রী, সোনার অলঙ্কার, পাথরের তৈরি একাধিক মূর্তি। সবমিলিয়ে সাম্প্রতিক আবিষ্কার মিশরের ঐতিহাসিক গৌরবকে যেন বাড়ি দিল আরও খানিকটা…
Powered by Froala Editor