সৌন্দর্য ও ইতিহাস বিচারে সেরার শিরোপা পেল ১০০০ বছরের বুড়ো ওক গাছ

গোটা পৃথিবী বৃক্ষনিধনের উৎসবে মেতেছে। কোথাও দাবানল কোথাও বা সড়ক নির্মাণ - কোনো না কোনো ছুতোয় গাছ কেটে নিজেদের আরো খানিক নিঃস্ব করার দিকে ছুটে চলেছি আমরা প্রতিনিয়ত। এই সময়ে দাঁড়িয়ে এ যেন উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম। লিভারপুল শহরের একটি গাছ কিছুদিন আগে জিতে নিয়েছে এক বিরল পুরস্কার। নর্মানরা যখন ইংল্যান্ড দখল করেছিল, সেই সম্ভাব্য ১০৬৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে এই আলার্টন ওক গাছটি সেখানে আছে বলে জানা গেছে। আয়ারল্যান্ড ও ব্রিটেনকে কেন্দ্র করে হয় এই উদযাপন। এই বৃক্ষ পুরস্কারটি মূলত দেওয়া হয় গাছটির সৌন্দর্য, চরিত্র ও ইতিহাস মাথায় রেখেই।

প্রায় ১১ হাজার (৩৪%) ভোট পেয়ে নিকটতম দুই প্রতিদ্বন্দ্বী তথা এসেক্স রাজপ্রাসাদের একটি সিনামোর ও 'দ্য ড্রাগন ট্রি'-কে হারিয়েছে এই বৃক্ষসুন্দরী। এমনকি, পরের বছর অনুষ্ঠিত ‘ইউরোপিয়ান ট্রি অফ দ্য ইয়ার’ প্রতিযোগিতায় স্বদেশের প্রতিনিধিত্বও করবে এই আলার্টন ওক। ড্রাগন গাছকে নিয়েও উত্তেজনা কম ছিল না। লোকমুখে শোনা যায়, এই ড্রাগন গাছটি নাকি এক ভয়ংকর ড্রাগনের দেহ।

অন্যদিকে আলার্টন ওক-টির বয়সও এক হাজার বছরেরও বেশি বলে মনে করা হয়। লিভারপুল শহরের অন্যতম দ্রষ্টব্য এই গাছটির পাদদেশে একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা আছে, “One thousand years ago, Allerton did not possess a courthouse and it is believed that the sittings of the Hundred Court were held under the spreading branches of this tree.” ১৮৬৪ সালে মারসি নদীর ওপর এক বারুদ বোঝাই জাহাজের বিস্ফোরণের ফলে এই গাছের কাণ্ডের এক বিশাল ফাটলও জন্মায়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন যে লিভারপুলের সেনারা যুদ্ধে যেত, এই আলার্টন ওকের একটি পাতা সঙ্গে রাখত তারা। তাদের বিশ্বাস ছিল, এই গাছের পাতাই তাদের শক্তির উৎস। ভেবে দেখুন, একটা গাছের শিকড় মানুষের মনের কতটা গভীরে হলে একটি দেশের কয়েক প্রজন্মের বিশ্বাসের ধারক-বাহক হওয়া যায়!