বাংলায় যখন বর্ধমানের আউশগ্রামে মাত্র দু’টাকার বিনিময়ে মানুষ তৈরির কর্মসূচি চালিয়ে যাছেন অশীতিপর শিক্ষক সুজিত চট্টপাধ্যায়, তখন একই রকম ছবি ওড়িশার প্রান্তিক জেলাতেও। না, শিক্ষার প্রসার নয়। বরং ওড়িশার গঞ্জম জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে ডাঃ কৃষ্ণমোহন পাথি চিকিৎসা করছেন বিনামূল্যে। বয়স ৮২ বছর। তবুও দরিদ্র মানুষদের সেবায় নিজেকে ব্রতী করে রেখেছেন তিনি। চলতি বছরে তিনিও সম্মানিত হলেন পদ্মশ্রী পুরস্কারে।
১৯৩৯ সালে তাঁর জন্ম ওড়িশার বারহামপুরের নিকটবর্তী সুকুণ্ডা গ্রামে। এমবিবিএস করেছেন কটকের এসসিবি মেডিক্যাল কলেজ থেকে। ১৯৭২ সালে কমনওয়েলথ মেডিক্যাল ফেলো হিসাবে বিদেশযাত্রা ডাঃ কৃষ্ণ মোহনের। ইংল্যান্ডের রেডক্লিফ ইনফার্মারি, লিভারপুর, বার্মিংহামে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। তবে নব্বইয়ের দশকে বিদেশের সেই স্বচ্ছল জীবনযাপন ফেলেই তিনি ফিরে এসেছিলেন ওড়িশায়।
ওড়িশায় ফিরে বারহামপুরের ভিআইএমএসআর, বুরলা, এমকেসিজি মেডিক্যাল কলেজে কাজ করেছেন তিনি। তবে সেই সময় সমাজের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠে তাঁর সামনে। শুধুমাত্র অর্থের অভাবে তিনি চিকিৎসার পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে দেখেন দরিদ্র মানুষদের। আর তারপরই ঠিক করে নেন নিজের পথ। শুরু করেন ওড়িশার দরিদ্র ও উপজাতি অঞ্চলের মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসার কর্মযজ্ঞ।
দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সমাজসেবামূলক কাজ চালিয়ে আসছেন ওড়িশার এই অশীতিপর খ্যাতনামা অর্থোপেডিক সার্জেন। এক কথায় ওড়িশার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কাছে তিনি ঈশ্বরতুল্যই। তবে শুধু যে সমাজসেবার ক্ষেত্রেই আটকে রয়েছে তাঁর ভূমিকা, এমনটা একেবারেই নয়। ওড়িশার তরুণ চিকিৎসকদেরও কাছেও এই ধরণের কাজে অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন ডাঃ কৃষ্ণ মোহন…
Powered by Froala Editor