রাস্তাতেই বেড়ে ওঠে তারা। কখনও কখনও আমাদের নেকনজরে পড়ে, বেশিরভাগ সময়ই জোটে অবজ্ঞা। সেই ব্যবহার মৃত্যুও ডেকে আনে তাদের জীবনে। ওরা তো কারোর পোষা নয়, কাজেই আমাদের ‘সভ্য সমাজে’ এই রাস্তার কুকুরদের বেঁচে থাকার অধিকারই বা কতটুকু! এরকম মানসিকতাই দেখা যায় আমাদের চারপাশে। তারই আরও একটি উদাহরণ উঠে এল ভুবনেশ্বরে। যেখানে একটি অন্তঃসত্ত্বা কুকুরকে আক্রমণ করার অভিযোগ উঠল একদল ‘মানুষের’ বিরুদ্ধে।
ভুবনেশ্বরের সামান্তারাপুরে ঘটেছে এই ঘটনা। সেখানেই একটি জায়গায় একটি কুকুরের ওপর আক্রমণ করে বসেন এক মহিলা। বড়ো লোহার রড নিয়ে কুকুরটিকে বেধড়ক মারধোর করেন তিনি। মহিলাটি একাই নন, প্রতিবেশী আরও কিছু মানুষ যুক্ত হন তাঁর সঙ্গে। কিন্তু কী জন্য এই আক্রমণ, সেটা জানা যায়নি।
বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে এই মারধোরের ঘটনা। কুকুরটি প্রতিরোধের কোনো চেষ্টা করারই সুযোগ পায়নি। তারপর অনেকক্ষণ ওইখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকে সে। অবশেষে সেখানকারই এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে কুকুরটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। উদ্ধার করার সময়ই দেখা যায়, কুকুরটি অন্তঃসত্ত্বা। ওইরকমভাবে মারার পর হাসপাতালেই দুটি অপরিণত বাচ্চার জন্ম হয়। একটি ইতিমধ্যেই মারা গেছে, আরেকটি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। মা-কুকুরটি এখন কিছুটা সুস্থ আছে। কিন্তু তার সন্তানের কী হবে, তা এখনই বলতে পারছেন না ডাক্তাররা।
ইতিমধ্যে মহিলাটির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে থানায়। পুলিশও যথাযথ সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সর্বত্র। ভুবনেশ্বরের গণ্ডি পেরিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে এই খবর। এরকম প্রতিবাদ, সচেতনতার বার্তা তো অনেক সময়ই দেওয়া হয়েছে। খবরের শিরোনামেও উঠে এসেছে সেসব। তাও এরকম ঘটনা আমাদের ‘সভ্য’ আচরণকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে বারবার।