তামিলনাড়ুর গৃহহীন মানুষদের আশ্রয় জোগাচ্ছেন ২৩ বছরের তরুণী

তাঁদের কেউ বিশেষভাবে সক্ষম। কেউ মানসিক ভারসাম্যহীন। আবার কেউ আহত হয়েছেন সদ্য। তবে প্রত্যেকের মধ্যে মিল একটাই। তাঁরা প্রত্যেকে গৃহহীন। ফুটপাথনিবাসী (Homeless People) সেইসব মানুষদেরই মাথায় ছাদ, স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিচ্ছেন এক তামিল তরুণী। তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) বুকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন আস্ত এক রিহ্যাব সেন্টার (Rebahitation Centre)।

কে মনীষা (K Manisha)। এই সেই বছর তেইশের তামিল তরুণী যিনি অক্লান্ত পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছেন অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোর। একইসঙ্গে চলছে তামিলনাড়ুর নন্দা নার্সিং কলেজে অবশ্য তাঁর নিজের জীবনের গল্পটাও কম লড়াইয়ের নয়। ছোটো থেকেই আর্থিক টানাপোড়েনের মধ্যেই বেড়ে ওঠা ইরোড জেলার মনীষার। বাবা ছিলেন পেশায় কশাই। পড়াশোনার পাশাপাশি সে ব্যবসাতেও বাবাকে সাহায্য করতে প্রতি সপ্তাহে দোকানে হাজিরা দিতে হত তাঁকে। একপ্রকার ‘পারিশ্রমিক’ হিসাবেই আয়ের সামান্য অংশ সপ্তাহান্তে হাতে পেতেন মনীষা। 

তখন কতই বা বয়স? বড়োজোর ক্লাস সিক্স কি সেভেন। সামান্য সেই উপার্জন জমিয়েই সমাজকর্মীর পথ বেছে নিয়েছিলেন মনীষা। গড়ে তুলেছিলেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘জীবিতম ফাউন্ডেশন’। সামান্য সামর্থ্য নিয়েই গৃহহীনদের হাতে খাবার কিংবা নতুন পোশাক তুলে দিতেন মনীষা। পাশাপাশি চলত পড়াশোনাও। 

তবে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পর তাঁর কাজের পরিধিও বেড়ে গেছে বহুগুণ। কলেজে অতিথি প্রভাষকের পদে নিযুক্ত হওয়ার পর, নিজেই আস্ত একটি রিহ্যাব সেন্টার খুলে ফেলেছেন তিনি। শুধু পথবাসীদের সাহায্যপ্রদানই নয়, অসহায় মানুষগুলোকে যেন নতুন জীবন উপহার দিচ্ছে তাঁর এই সংস্থা। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩৫০-রও বেশি গৃহহীনকে জায়গা করে দিয়েছেন মনীষা। তাঁদের শারীরিক পরিচর্যার দায়িত্বও তুলে নিয়েছেন নিজের কাঁধে। এখানেই শেষ নয়। যাতে তাঁরাও স্বাধীনভাবে বাঁচার সুযোগ পান, সেজন্য উপার্জনের বন্দোবস্তও করে দিয়েছেন তিনি। 

আরও পড়ুন
৩ লাখ গৃহহীনকে আশ্রয় দিতে পারে ব্রিটেনের গলফ কোর্স

তবে আজ মনীষা একা নন। তাঁর এই উদ্যোগে সঙ্গী হয়েছেন গোটা জেলার কয়েকশো তরুণ-তরুণী। তাঁরাও তাঁর সঙ্গে জুটি বেঁধেই সামলাচ্ছেন হোমের কাজ। পরিচর্যা করছেন গৃহহীন মানুষগুলোকে। একুশ শতকের পৃথিবীতে দাঁড়িয়েও মানবিকতা বেঁচে আছে, তাই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন মনীষা…

আরও পড়ুন
করোনাকালে গৃহহীন ইংল্যান্ডের ৭ লক্ষ পরিবার!

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
গৃহহীন মানুষদের নিজস্ব সংবাদপত্র, উপার্জনের স্বপ্ন ও একটি বিপ্লবের গল্প