পড়ে রইল হাজার হাজার ডলারের চাকরি। কর্পোরেট জীবন, কেরিয়ারের উচ্চাশা, বিলাস-ব্যসন ছেড়ে মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়নীর কাছেই একটি জমি কিনে কৃষিকাজে মন দিয়েছেন তাঁরা। সাক্ষী এবং অর্পিত মাহেশ্বরী। দু'জনেই যথাক্রমে আইআইটি বম্বে এবং দিল্লির প্রাক্তনী। কর্মজীবন কাটিয়েছেন ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রে। মাইক্রোসফট ও গোল্ডম্যান স্যাক্সের মতো নামী সংস্থায়। কিন্তু কাজের দুনিয়ায় ক্রমশ হাঁফিয়ে উঠছিলেন তাঁরা। মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল অনেকগুলো প্রশ্ন। পুঁজিসর্বস্ব ইঁদুর দৌড়েই কী রয়েছে সার্থক জীবনের চাবিকাঠি? নাকি হেথা নহে, অন্য কোথা, অন্য কোনোখানে?
উত্তর খুঁজতে একদিন চাকরিবাকরি ছেড়ে একবছরের জন্য তল্পি-তল্পা গুটিয়ে দক্ষিণ আমেরিকায় পাড়ি দেওয়া। আর সেখানেই জীবন বদলে গেল তাঁদের। চিলির একটি স্কুলে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করেছিলেন দু'জনে। আর সেখানেই তাঁদের নজরে আসে নগরায়ণের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ রূপ। ফলে একসময় নগরকেন্দ্রিক সভ্যতাকে দূরছাই বলে ফিরে আসেন দুজনেই।
বর্তমানে প্রায় দেড় একর জমির উপর সাক্ষী এবং অর্পিত নিজে হাতে পুঁতেছেন প্রায় ৫০০টি গাছ। গড়ে তুলেছেন সবজি বাগান, শষ্যক্ষেত। তাঁদের বিলাসবিহীন জীবনের যাবতীয় উপাদান উঠে আসে এখান থেকেই। তাঁদের এই উদ্যোগের নাম জীবন্তিকা।‘ জীবন্তিকা আসলে সচেতন জীবনযাপনের চাবিকাঠি খোঁজার একটি পরীক্ষাগার।’, এমনটাই মত দুজনের।
এছাড়া সাক্ষী একজন যোগব্যায়াম শিক্ষক। বিভিন্ন কোম্পানির কর্মীদের ‘ওয়েলনেস সেশন’ করাচ্ছেন তিনি। কর্মব্যস্ত নগরকেন্দ্রিক পুঁজিসর্বস্ব সভ্যতায় তাঁরা খুঁজে চলেছেন ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়।
Powered by Froala Editor