মাত্র কয়েকদিন আগের কথা। ইজরায়েলের অন্যতম সুরক্ষিত কারাগার থেকেই সুড়ঙ্গ খুঁড়ে পলাতক হয়েছিলেন ৬ প্যালিস্তিনি রাজবন্দি। গোটা বিশ্বেই রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিল সেই ঘটনা। পরবর্তীতে ইজরায়েল জেল কর্তৃপক্ষের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয় খাবার চামচের মাধ্যমেই এই সুড়ঙ্গ খনন করে প্যালেস্তাইনের রাজবন্দিরা। এবার সেই চামচই (Spoon) হয়ে উঠল প্যালেস্তিনিদের (Palestine) প্রতিবাদের (Protest) অন্যতম প্রতীক।
ইজরায়েলের কারাগার থেকে রাজবন্দিদের পলায়নের ঘটনা রীতিমতো প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল ইজরায়েলের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে। আর এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই সম্প্রতি গণ হারে প্যালেস্তিনিদের গ্রেপ্তার করা শুরু করেছে ইজরায়েলি পুলিশ। ইজরায়েল অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক থেকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে শতাধিক প্যালিস্তিনিকে। বিগত দু’সপ্তাহ ধরেই রীতিমতো অভিযান চলছে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের রামাল্লা, হেব্রন, নাবলুশে-সহ অন্যান্য জনপদগুলিতে। নির্বিচারে আটক করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বাদ পড়ছে না শিশুরাও। এমনকি ইজরায়েলি সেনারা মারধর ও নির্যাতন করছে বলেও অভিযোগ স্থানীয় প্যালিস্তিনিদের। একইভাবে ‘অত্যাচার’ চলছে ইজরায়েলে বসবাসকারী প্যালেস্তিনিদের ওপরেও
এই ঘটনার প্রতিবাদেই ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক ও প্যালেস্তাইনের একাধিক জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভের আগুন। আর সেই প্রতিবাদে জাতীয় পতাকা এবং প্ল্যাকার্ডের পাশাপাশি ‘রেজিস্টেন্স’-এর অন্যতম প্রতীক হয়ে উঠেছে চামচ। চামচকেই বিজয়চিহ্ন হিসাবে দেখছেন তাঁরা।
অন্যদিকে ইজরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী ফের গ্রেপ্তার করেছে পলাতক ছয় রাজবন্দিকে। গ্রেপ্তারের পর তাঁদের ওপরে রীতিমতো মানসিক অত্যাচার চালানো হচ্ছে বলেও দাবি জানান এক রাজবন্দির আইনজীবী। সেই ঘটনাই যেন আরও ঘৃতাহুতি দিয়েছে সাম্প্রতিক আন্দোলনে।
আরও পড়ুন
প্রাইভেসির ত্রাস ইজরায়েলের ‘পেগাসাস’, শিকার ভারতের রাজনীতিক-সাংবাদিকরাও?
তবে শুধু ইজরায়েল কিংবা প্যালেস্তাইন নয়, এই ‘চামচ-বিপ্লব’ ছড়িয়ে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশেই। জর্ডন এবং কুয়েতের দুই শিল্পীর ছবি এবং ভাস্কর্যেও ধরা পড়েছে চামচ আন্দোলনের ছাপ। প্যালিস্তিনি কার্টুনিস্ট মহম্মদ সাবেনেহ এই ইজরায়েলের এই কর্মকাণ্ডকে অভিহিত করেছেন ‘ব্ল্যাক কমেডি’ নামে। তাঁর আঁকা ‘টানেল অফ ফ্রিডম’ কার্টুনটিও সাড়া ফেলে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আরও পড়ুন
ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘাত আজকের নয়, রয়েছে তার শতাব্দীপ্রাচীন দীর্ঘ ইতিহাস
অবশ্য ইজরায়েলের দাবি, রাজবন্দিদের কারাগারে ফেরানোর জন্যই সাম্প্রতিক সময়ে চাপ বাড়ানো হয়েছিল নিরাপত্তায়। গতকালই শেষ দুই পলাতক বন্দিকে গ্রেপ্তার করে ইজরায়েলের পুলিশ। এখন দেখার এর পরেও সশস্ত্র বাহিনীর নৃশংসতা বজায় থাকে কিনা…
আরও পড়ুন
নিরাপদ নয় শরণার্থী শিবিরও, ইজরায়েলি হামলায় মৃত্যু এক পরিবারের ৮ শিশুর
Powered by Froala Editor