চলতি শতাব্দীর একেবারে শুরুতেই ক্ষমতায় এসেছিলেন তিনি। বিগত দু’দশক রাশিয়ার চাবিকাঠি ছিল তাঁর হাতে। ২০২৪ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল তাঁর শাসনকালের। তবে হচ্ছে না তেমনটা। ২০৩৬ সাল পর্যন্ত মসনদে থাকার পথ নিজেই পাকাপাকি করে ফেললেন ভ্লাদিমির পুতিন। সরকারিভাবে সংবিধানের সংশোধনের মাধ্যমে সোমবার নতুন বিল পাশ করলেন তিনি।
গত বছরই এই নতুন বিলের কথা প্রস্তাবিত হয়েছিল ক্রেমলিনের অফিসে। সেখানে শর্ত দেওয়া হয়েছিল ভবিষ্যতে কেউ দু’বারের বেশি রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি থাকতে পারবেন না। তবে পুতিনের বিগত চারবারের মেয়াদকে পরিগণিত করা হয়নি তাতে। আর সেই কারণেই উঠে এসেছিল তীব্র বিরোধিতা। তবে সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন পুতিন। দাবি করেছিলেন, দেশের জনগণের অধিকাংশই সমর্থন জানাবে এই প্রস্তাবকে। হলও তেমনটাই। গত বছর ১ জুলাইয়ের সাংবিধানিক নির্বাচনে ৭২ শতাংশ রাশিয়ান নাগরিক পক্ষ নিলেন পুতিনের। তার সেই অঙ্কের ওপরে ভিত্তি করেই পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই পাশ হয়ে গেল রাষ্ট্রপতি মেয়াদ সংক্রান্ত আইনটি।
এই আইন পাশ হয়ে যাওয়ার পর, আরও দু’বার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন লড়তে পারবেন তিনি। তবে পুতিনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যালেক্সেই নাভালনি এখন কারাবন্দি। ফলত, ২০৩৬ সাল পর্যন্ত মসনদে থাকা তাঁর একপ্রকার নিশ্চিত। বর্তমানে পুতিনের বয়স ৬৮ বছর। আরও ১৫ বছর শাসন কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন তিনি সাংবিধানিক নিয়মে।
সোভিয়েতের পতনের পর, ক্রেমলিনের ক্ষমতাসীন শাসকদের মধ্যে দীর্ঘতম শাসনকাল পুতিনের। ২০৩৬ সাল পর্যন্ত সত্যিই যদি মসনদে থাকেন তিনি, তবে স্বৈরশাসক স্তালিনের রেকর্ডকেও ছাপিয়ে যাবেন পুতিন। আর ঠিক এই জায়গাটাতেই প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। আইনি ধাঁধাঁয় সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের পথরুদ্ধ করছেন তিনি। অভিযোগ, এই ঘটনা স্বৈরাচার ছাড়া আর কিছুই না।
আরও পড়ুন
বাইডেন-কে নির্বাচনে হারাতে চেয়েছিল রাশিয়া!
অন্যদিকে এমনটা মানতে নারাজ স্বয়ং রাষ্ট্রপতি। পুতিন জানাচ্ছেন, ২০২৪ সালের পরও নির্বাচনে তিনি লড়বেন কিনা, সে ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি তিনি। পাশাপাশি ‘ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস’ রেখে সমস্ত নাগরিকদের দেশের প্রতি চিন্তাশীল থাকার ‘পরামর্শ’ দিয়েছেন তিনি। তবে বিরোধীদের বক্তব্য, রাশিয়া জুড়ে আবার নেমে এসেছে ‘জারের শাসন’…
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মাত্র এক বছরে ৫ লক্ষ জনসংখ্যা হ্রাস, রাশিয়ার রিপোর্ট ঘিরে উদ্বেগ