ধর্ষণের মতো অপরাধের প্রকৃত শাস্তি কী হতে পারে, এ-প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সত্যিই কঠিন। আর সেই ধর্ষণের শিকার যদি হয় কোনো শিশু, তাহলে বোধহয় গোটা মানবসমাজকেই লজ্জায় মাথা হেঁট করতে হয়। আর এর মধ্যেই সম্ভবত পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে কঠোর শাস্তির পদক্ষেপ নিতে চলেছে নাইজেরিয়ার রাজ্য কাদুনা। নতুন আইন অনুযায়ী সেখানে শিশু-ধর্ষণের অপরাধে শাস্তির আগে অপরাধীর ক্যাস্ট্রেশন করা হবে।
১৬ সেপ্টেম্বর এই নতুন আইনে সাক্ষর করেন কাদুনার গভর্নর। এই আইন অনুযায়ী ১৪ বছরের কম বয়সী কোনো শিশুকে ধর্ষণ করা হলে সেই অপরাধীর ক্যাস্ট্রেশন করা হবে। অপরাধী পুরুষ হলে অপারেশনের মাধ্যমে তার টেসটিস বাদ দিয়ে দেওয়া হবে, আর মহিলা হলে তার ফ্যালোপিয়ান টিউব কেটে ফেলা হবে। এর ফলে আর কোনোরকম যৌন ক্রিয়াই তার পক্ষে সম্ভব হবে না।
এমনিতেই দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যান্য দেশের তুলনায় নাইজেরিয়ায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটে অনেক বেশি। আর এই করোনা পরিস্থিতিতে সেই সংখ্যা আরও বেড়েছে। সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি বছর অন্তত ২০ লক্ষ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে নাইজেরিয়ায়। আর এই পরিস্থিতিতে সেই হার প্রায় ৩ গুন বেড়ে গিয়েছে। ফলে সমাজের নানা স্তর থেকে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির দাবি ওঠে। সেই দাবি মেনেই পাশ হল নতুন এই আইন।
কাদুনা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ধর্ষকদের হাত থেকে শিশুদের রক্ষা করতে দৃশটান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতেই হত। আর সব দিক ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অবশ্য ধর্ষকদের ক্যাস্ট্রেশন করার প্রস্তাব নতুন কিছু নয়। কয়েক বছর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান একই শাস্তির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। গতবছর মাদ্রাজ হাইকোর্টেও একই প্রস্তাব জমা পড়ে। তবে সাংবিধানিক দেশে এমন শাস্তি এই প্রথম কার্যকর হতে চলেছে। তবে এর ফলে ধর্ষণের ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে কিনা, সেকথা সময় বলবে।
আরও পড়ুন
সামান্য সাফাইকর্মী থেকে বিমানের ক্যাপ্টেন, নাইজেরিয়ার ব্যক্তির শিখর ছোঁয়ার গল্প
Powered by Froala Editor